ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতিষ্ঠাতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির পৈতৃক বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় খোমেইন শহরের ওই বাড়িটির কাঠামো আগুনে পুড়ছে।
শুক্রবার (১৮ নভেম্ব) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির দেয়া এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
সংবাদ মাধ্যমগুলো ভিডিওতে অবস্থান শনাক্ত করলেও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আগুন দেয়ার ঘটনা অস্বীকার করেছে। ওই বাড়িটি আয়াতুল্লাহ খোমেনির জন্মস্থান যা এখন তার জীবনকে স্মরণীয় করে রাখতে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
খোমেনি ছিলেন ১৯৭৯ সালে ইরানে সংঘটিত ইসলামি বিপ্লবের নেতা যার নেতৃত্বে পশ্চিমা পন্থি শাসক শাহ মোহম্মদ রেজা পাহলভিকে পদচ্যুত করা হয় এবং একটি ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয় যা এখনও বিদ্যমান।
১৯৮৯ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত খোমেনি দেশটির সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং এখনও তার মৃত্যুর দিনটিকে শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ছবিতে দেখা যায় খোমেইন শহরের জনতা বাড়িটিতে আগুন ধরে যাওয়ার পর উল্লাস করছে। কর্মী সংগঠনগুলোর দেয়া তথ্য অনুযারী এই ফুটেজ সন্ধ্যার।
যদিও খোমেইন শহরের তথ্য অফিস এই হামলার কথা অস্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে আধা সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম। বার্তা সংস্থাটি জানায়, কিছু মানুষ বাড়িটির বাইরে জড়ো হয়েছিল। পরে তারা বাড়িটির একটি ভিডিও শেয়ার করে ও জানায় খোমেনির ভক্তদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বাড়িটি উন্মুক্ত আছে। সংস্থাটি জানায়, মহান বিপ্লবের প্রতিষ্ঠাতার বাড়ির দরজা সবার জন্য খোলা রয়েছে।
খোমেনির পৈতিক বাড়ির আগুনের ঘটনা তার উত্তরসূরি আয়াতুল্লাহ আলি খোমেনির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে চলতে থাকা বিক্ষোভের একটি অতিসাম্প্রতিক ঘটনা।
দুই মাস আগে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে মাশা আমিনি নামে ২২ বছরের নারীর মৃত্যূর ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশটিতে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মাশা আমিনিকে ইরানের কঠোর হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে আটক করা হয়েছিল।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের দেয়া তথ্যে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সবশেষ সহিংসতায় নিরাপত্তা বাহিনীর পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছে। শুক্রবার নয় বছরের ছেলে কিয়ান পিরফালাকের শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানের পর ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইজে শহরে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া তাব্রিজ, মাহাবাদ, জাহিদান শহরেও নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।