বিশ্ব জুড়ে প্রায় সর্বত্রই শৌচাগারে ‘টয়লেট পেপার’ ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। পাশ্চাত্য এবং শীতপ্রধান দেশগুলির মধ্যে এই কাগজ ব্যবহারের প্রচলন বেশি। চিকিৎসকদের মতে, মলত্যাগ করার পর টয়লেট পেপারের মতো জিনিস দিয়ে গায়ের জোরে মলদ্বার পরিষ্কার করার ফলে একাধিক সমস্যা তৈরি হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের এক হাসপাতালের শল্যচিকিৎসক ব্র্যাডলি মরিস বলছেন, “মলদ্বার সংলগ্ন অঞ্চল যথেষ্ট স্পর্শকাতর। পাশাপাশি, দেহের এই অংশের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাও জরুরি। কিন্তু আমি বুঝতে পারি না, তার জন্য আমরা টয়লেট পেপার ব্যবহার করব কেন? আমরা কি মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে মাটি ব্যবহার করি?’’ মুখে পানির বদলে মাটি ব্যবহার করলে ত্বকে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়, দেহের স্পর্শকাতর অংশ পরিষ্কার করতে কাগজ ব্যবহার করলে ঠিক ততটাই ক্ষতি হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক মরিস।
তিনি আরও বলেন, “আমার মনে হয় বহু দিনের প্রচলিত এই প্রথায় বদল আনা প্রয়োজন। মলদ্বার পরিষ্কার করার জন্য পানির ব্যবহারই সবচেয়ে নিরাপদ।”
শুধু তা-ই নয়, দিনের শুরুতেই অনেকে শৌচাগারে বেশ অনেকটা সময় অতিবাহিত করেন। যদিও তার অন্যতম একটি কারণ হল কোষ্ঠকাঠিন্য। কিন্তু এই কোষ্ঠও মলদ্বারের টিস্যুগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করে। ওই অংশের ত্বক ছিড়ে গিয়ে রক্তপাত হওয়াও অস্বাভাবিক নয়।
চিকিৎসকের বক্তব্য, এই সমস্যা যে প্রত্যেকের হবেই, তার কোনও মানে নেই। মলের ধরন এবং ত্বক কতখানি স্পর্শকাতর, তার উপরও অনেক কিছুই নির্ভর করে। যেহেতু শৌচাগারে কাটানো সময়টুকু প্রত্যেকটি মানুষের কাছেই ব্যক্তিগত সময়, তাই অনেকেই এই সময়টা ফোনের পিছনে কাটিয়ে দেন। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, এই সময়টুকু একেবারে নিজের, তাই প্রাতঃকৃত্যের উপরই মন দেয়া উচিত।
মরিস বলেন, “আমার এই বক্তব্যের পক্ষে কোনও বৈজ্ঞানিক যুক্তি দেখাতে পারব না। কিন্তু পাশ্চাত্য দেশের নাগরিকদের মলদ্বার সংক্রান্ত সমস্যায় পড়ার বহু উদাহরণ রয়েছে।
শুধু তা-ই নয়, মলদ্বারে সামান্য কেটে বা ছড়ে যাওয়া থেকে পরবর্তী কালে কোলন ক্যানসারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার নজিরও রয়েছে।”
সূত্র: হেলথ লাইন