গণধর্ষকদের মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন বিলকিস বানো। বিলকিসের ধর্ষকদের আগাম মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য গেলো মে মাসে শীর্ষ আদালত গুজরাট সরকারকে প্রয়োজনীয় অনুমতি দেয়।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের কাছে এই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছেন বিলকিস।
জানা গেছে, ১৯৯২ সালের সাজা মকুফ করার নিয়মের আওতায় ধর্ষকদের মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। চলতি বছরের মে মাসের সেই সিদ্ধান্তের জেরেই আগস্ট মাসে ১১ জন ধর্ষকদের মুক্তি দেয় গুজরাট সরকার। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আরজি জানিয়ে আবেদন করেছেন বিলকিস। প্রসঙ্গত, সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য একাধিক আবেদন জমা পড়েছে শীর্ষ আদালতে। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও এই আবেদন জানিয়েছিলেন।
এই এগারো জনের সাজা মকুফ করার সপক্ষে শীর্ষ আদালতে গুজরাট সরকারের পক্ষে যুক্তি দেয়া হয়েছিল যে, তারা জেলে ‘ভাল আচরণ’ করত। সুপ্রিম কোর্টে গুজরাট সরকারের কৌঁসুলি হলফনামা দিয়ে জানান, দোষী সাব্যস্ত হওয়া এগারো জন চোদ্দ বছর জেল খেটেছে। তা ছাড়া জেলের ভেতর তারা ভালো ব্যবহার করত। তাই তাদের ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে গুজরাটে গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গার সময় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করেন এই এগারো জন। বিলকিসের মেয়ে-সহ পরিবারের ৭ জনকে তার চোখের সামনেই খুন করা হয়। এ মামলায় ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের কাছে এই মামলার শুনানির আবেদন করেছেন বিলকিসের আইনজীবী। চন্দ্রচূড় জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই এই বিষয় নিয়ে একটি মামলার শুনানি চলছে। একই বেঞ্চে এক সঙ্গে দুটি মামলার শুনানি করা যায় কিনা, সেই বিষয়টি ভেবে দেখবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে গোধরা হিংসার সময়ে অন্ত্বসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুনের অভিযোগে ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
গুজরাট সরকারের নির্দেশে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার পরেই দেশজুড়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে, ধর্ষকদের কার্যত বীরের সম্মান দিয়ে বরণ করা হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে। তারপরেই গুজরাট সরকারের কাছে হলফনামা তলব করে শীর্ষ আদালত। তবে সাধারণ মানুষের অধিকাংশই চান, সিদ্ধান্ত বদল করুক গুজরাট সরকার। ফের জেলে বন্দি করা হোক অপরাধীদের।