অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রাণালয় থেকে এ গেজেট প্রকাশ করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান। একই সঙ্গে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
গেজেটে বলা হয়েছে, তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। আদালত বিশ্বাস করার যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে যে, তারা গ্রেপ্তার ও বিচার এড়াতে আত্মগোপনে রয়েছেন। সেহেতু তাদের আগামী ধার্য তারিখের (৬ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যথায় তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ সম্পন্ন করা হবে।
এর আগে গেলো ১৯ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান তাদের আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশ করার আদেশ দেন। একই সঙ্গে এ বিষয় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত।
ওইদিন তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাদের কোনো মালামাল পাননি বলে আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর বিচারক মামলার পরবর্তী প্রদক্ষেপ হিসেবে বিজি প্রেসের মাধ্যমে তাদের আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন।
গেলো বছরের ১ নভেম্বর তারেক রহসান ও জোবায়দার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আদালত। তাদের গ্রেপ্তার করতে না পারায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আদালত তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসিকে ১৯ জানুয়ারির মধ্যে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ঘোষিত আয়ের বাইরে চার কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। এরপর ২০০৮ সালে এই তিনজনের বিরুদ্ধে দাখিল করা হয় অভিযোগপত্র।
এদিকে মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জোবায়দা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। তবে এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে রায় দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই মামলায় আট সপ্তাহের মধ্যে জোবায়দাকে বিচারিক আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেয়া হয়।
উচ্চ আদালতের এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরই লিভ টু আপিল করেন জোবায়দা। এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ লিভ টু আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখেন।