বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ তাফালবাড়ী গ্রামে বড় ভাইকে ফাঁসাতে চার মাসের কন্যা সন্তান নুপুরকে পুকুরে ফেলে হত্যা করেন পাষণ্ড বাবা মজিদ মোল্লা (৩৫)।
রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে।
এ ঘটনায় স্ত্রী মারুফা বেগম বাদী হয়ে সন্তান হত্যার অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘাতক মজিদকে আটক করেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মৃত লতিফ মোল্লার ছেলে মজিদ মোল্লা একজন দিনমজুর। নিজের জমিজমা না থাকায় স্ত্রী আর তিন সন্তান নিয়ে একই গ্রামের নূরজাহান বেগমের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। অভাবের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকতো। পাশাপাশি ১৫ কাঠা শরিকী সম্পত্তি নিয়ে বড় ভাই রশিদ মোল্লার সঙ্গে বিরোধ ছিল তার। সেই বিরোধের সূত্র ধরে বড় ভাইকে ফাঁসাতে নিজের কন্যা সন্তানকে ভাইয়ের পুকুরে ফেলে দিয়ে হত্যা করে ঘাতক মজিদ।
মামলার বাদী জানান, গত ৩০ মার্চ স্বামী মজিদ মোল্লা এবং ভাসুর রশিদ মোল্লার মধ্যে জমির বিরোধ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় মাটিকাটার কাজ শেষে বাড়িতে এসে ছেলেকে (৯) সঙ্গে দিয়ে আমাকে স্থানীয় তাফালবাড়ী বাজারে ওষুধ কিনতে পাঠায়। এ সময় মেজ মেয়ে নবীছা (৬) ও চার মাসের নূপুরকে স্বামীর কাছে রেখে যাই। সেই ফাঁকে মেঝ মেয়েকে এক প্রতিবেশীর বাসায় রেখে নূপুরকে নিয়ে ভাসুর রশিদ মোল্লার পুকুরে ফেলে দিয়ে আবার বাসায় চলে এসে চুপচাপ থাকে।
স্ত্রী মারুফা জানান, ওষুধ নিয়ে এসে নুপূরকে না পেয়ে জানতে চাইলে স্বামী অসংলগ্ন কথা বলতে থাকেন। একপর্যায় আমার স্বামী মেয়ে নুপূরকে নিয়ে বড়ভাই রশিদের বাড়িতে গেলে অন্ধকারে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মেয়েটি পুকুরে পড়ে গেছে বলে জানায়। একথা শোনার পর দৌড়ে গিয়ে পুকুর থেকে ভসমান অবস্থায় মেয়েকে উদ্ধার করে শরণখোলা হাসপাতালে নিলে ডক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে ভাসুর আ. রশিদ মোল্লা বলেন, আমাকে ফাঁসাতেই নিজের মেয়েকে আমার পুকুরে ফেলে রেখে যায়। কিন্তু পুলিশ তার কথা শুনে আসল ঘটনা বুঝতে পারে।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান বলেন, মজিদকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে নুপূরকে পুকুরে ফেলে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় স্ত্রী মারুফা বাদী হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। নিহত শিশুটিকে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এস