রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকার কর্ণফুলী আবাসিক হোটেল থেকে মো. আদনান সাকিব (২৫) নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) ভোর ৪টায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলাশ সাহা জানান, বুধবার (২৭ অক্টোবর) রাত ৯টায় তার স্ত্রী নুসরাত আফরিন থানায় এসে জানান তার স্বামী আদনানকে দুই দিন ধরে পাওয়া যাচ্ছে না। পরশুদিন দুপুরে শেষ কথা হয়, এরপর আর পাওয়া যায়নি। তিনি শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং- ১৯৫৪) করেন।
এরপর আমরা সাকিবের মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাকিং করি। সেখানে দেখা যায়, সেগুনবাগিচা এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে তার অবস্থান দেখাচ্ছে। কিন্তু সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি। পাশের কর্ণফুলী আবাসিক হোটেলে খোঁজ নিলে তার সন্ধান মেলে। ১০৭ নম্বর কক্ষে গিয়ে তাকে ডাকাডাকি করলেও সে দরজা খুলে নাই। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে দেখি তিনি ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছেন।
তিনি আরো জানান, সাকিব একটি সুইসাইড নোট লিখে গেছে। সেখানে লিখেছে- তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। তিনি স্ত্রীকে ভালো বলে গেছেন। স্ত্রীকে দোষারোপ না যেন করা না হয় সে কথাও লিখেছেন। সুইসাইড নোটে ১২ বছরের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তার কাছে ১ সেকেন্ড ১ বছরের মতো মনে হয় বলেও লেখা আছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, সাকিবের বন্ধুরা জানিয়েছে তিনি ঢাবি ২০১৪-১৫ সেশনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র ছিলেন। শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।
আমরা ঢাবির প্রক্টরকে জানিয়েছিলাম তিনি এসেছিলেন। তবে তার পরিবারের কেউ এখনও আসেনি। তার স্ত্রী নুসরাত আফরিনকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি আসছেন।
তার সহপাঠীরা জানান, সাকিব দীর্ঘদিন মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন।
নিহতের বাড়ি নীলফামারীর ডিমলা থানার উত্তর সোনাখুলী গ্রামে। এ গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে নিহত মোহাম্মদ আদনান সাকিব।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া জানিয়েছেন, মরদেহটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। শাহবাগ থানা বিষয়টি তদন্ত করছে।
