আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও রাজশাহীতে চরম দুর্ভোগ

ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও রাজশাহীতে চরম দুর্ভোগ

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন মালিক শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘট রাজশাহীতেও পালন হচ্ছে। আজ শনিবার দ্বিতীয় দিনের মত চলছে এ পরিবহন ধর্মঘট। হঠাৎ পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দেয়ায় গত দুদিন থেকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। এমন অবস্থায় ছোট যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে যাত্রীদের। অনেকে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা ও ঢাবির ভর্তি দিতে বের হয়ে পড়েছেন যানবাহন সঙ্কটে। তবে রাজশাহী বাস টার্মিনাল থেকে কোনো দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি।

শুক্রবার (৫ নভেম্বর) পরিবহন বন্ধের প্রথম দিন ছিল। আজ শনিবার (৬ নভেম্বর) দ্বিতীয় দিন। এদিন সকালে অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেরিয়ে যানবাহন না পেয়ে দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন সাধারণ মানুষ। বেশির ভাগ মানুষ সিএনজি ও অটোরিক্সায় যেতে দেখা গেছে শহর থেকে বাইরে। আবার শহরে যারা এসেছেন তাদের অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে আসতে হয়েছে। 

এদিকে নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁয় যাওয়ার এক মাত্র বাহন হিসাবে ব্যবহার জচ্ছে আটোরিক্সা ও সিএনজি। এর বাইরে আর যাওয়ার কোনো যানবাহন নেই। এতে করে গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া।

রাকিবুল ইসলাম নামের একযাত্রী জানান, ‘রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাসের ভাড়া ৭০ টাকা। কিন্তু অটোরিক্সায় নেয়া হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা। বাস না থাকায় বেশি ভাড়া নিচ্ছেন অটোরিক্সা চালকরা।’

অন্যদিকে, অনেক যাত্রী ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রাজশাহীর বাস টার্মিনালে আসছেন। কিন্তু বাস না থাকায় তারা বিকল্প হিসেবে ট্রেনের টিকিটের স্টেশনে ভীড় করছেন। কিন্তু সেখানেও পাওয়া যাচ্ছে না টিকিট। বাস বন্ধের কারণে ব্যাপক চাপ পড়েছে ট্রেনের উপর। এতে টিকিট দেয়া শুরু হতে না হতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই স্ট্যান্ডিং টিকিট পেলেও কেউ বা ফিরেছেন খালি হাতে। তবে কর্মজীবী মানুষগুলো সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। কর্ম বাঁচাতে (টিকিয়ে রাখতে) বেশি ভাড়া দিয়ে হলেও বিকল্প উপায়ে ছুটতে হয়েছে গন্তেব্যে।

রাজশাহী বাস টার্মিনালে যাত্রী হযরত আলী জানান, ‘চাকরি করি পাবনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে। আমিসহ ৫ জনের অগ্রিম টিকিট কেনেছিলাম বেশ কয়েকদিন আগে। আজ টার্মিনালে এসে দেখি বাস বন্ধ। তাই ফিরে যেতে হবে বাড়িতে।’ তিনি আরো জানান- ‘টিকিট ফেরতের জন্য কাউন্টারে যোগাযোগ করি। এতে শুরু হয়- তালবাহানা। কাউন্টারের কর্মীরা মুঠোফোন জানায়- যখন বাস ছাড়ার কথা ছিল। তখন আসলে টিকিটের টাকা ফেরৎ দিতেন তারা। বাস ছাড়ার সময় ছিল সকাল ৬টায়। কিন্তু আগেই শুনেছি বাস বন্ধ। তাই আর সকালে আসিনি; এসেছি সকাল ১০ টায়। অনেক কথার পরে তারা টিকিটের টাকা ফেরৎ দিনে চাইলো।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-মহানন্দা কাউন্টারের মাস্টার তাহাব আলী জানান, ‘যারা টিকিট কিনেছেন, বাস বন্ধ থাকার কারণে যাত্রা করতে পারেনি। তাদের টাকা ফেরৎ দেয়া হচ্ছে।’ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন। রজনীগন্ধা পরিবহনের কাউন্টার থেকে আসাদ শেখ জানান, অগ্রিম যাদের টিকিট কাটা ছিল; তাদের টাকা ফেরৎ দেয়া হয়েছে। তবে এখনও বলা যাচ্ছে না কখন থেকে বাস চলাচল করবে।

রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, সরকার বা কেন্দ্রীয় ভালো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তেলের দাম বাড়ায় যাত্রী পরিবহনে লোকসান হবে। তেলের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে বাস চালানো মুশকিল। আগের ভাড়ায় বাস চালানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ধর্মঘটের | দ্বিতীয় | দিনেও | রাজশাহীতে | চরম | দুর্ভোগ