আর্কাইভ থেকে এশিয়া

পশ্চিমবঙ্গে স্কুলে বন্দুকধারীর হামলা

পশ্চিমবঙ্গে স্কুলে বন্দুকধারীর হামলা
বিশ্বের বিভিন্ন স্কুলে বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনা ঘটে থাকে। এবার পশ্চিমবঙ্গের স্কুলেও সেই ঘটনা ঘটল। আগ্নেয়াস্ত্র হাতে স্কুলের ক্লাসরুমের মধ্যে ঢুকে পড়ে বন্দুকধারী। সশস্ত্র অবস্থায় ঢুকে শিক্ষার্থীদের বন্দী করে এক ব্যক্তি। বুধবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়ায় পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাইস্কুলে। শুধু বন্দুক নয়, সেই যুবকের সঙ্গে ছিল অ্যাসিডের বোতল, পেট্রোল বোমা ও ধারালো অস্ত্র (চাকু)। এতে আতংক ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। প্রায় এক ঘণ্টা তীব্র উত্তেজনা-উৎকণ্ঠা শেষে পুলিশকর্মীদের সাহসিকতায় কোনো প্রাণহানি ছাড়াই ধরা পড়ে ওই ব্যক্তি। তবে ওই যুবক কী উদ্দেশ্যে স্কুলে চড়াও হয়েছে, তা পরিষ্কার করে জানা যায়নি। বুধবার দুপুরে অন্যান্য দিনের মতোই ক্লাস চলছিল মালদা শহরের ওই স্কুলে। তখনই কাধে ব্যাগ, দুই হাতে ২টি পিস্তল, ২টি বোতল ও পায়ে ধারালো অস্ত্র বেধে স্কুলে ঢুকে পড়ে ওই ব্যক্তি। জানায়, বোতলে অ্যাসিড ও পেট্রল বোমা রয়েছে। অস্ত্র হাতে শিক্ষার্থীদের রীতিমত ভয় দেখিয়ে ‘মুক্তিপণ’ দাবি করে। বন্দুক উঁচিয়ে রীতিমত শাসানি দিতে থাকে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ক্লাসের মধ্যে তাণ্ডব চালায় সে। যা দেখে আতংকে কাঁপতে থাকে শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি বুঝে মালদা থানায় খবর দেন শিক্ষকরা। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পুলিশ পৌঁছায়। এরপর নানা ব্যক্তিগত সমস্যার কথা বলতে শুরু করে ওই ব্যক্তি। তার দাবি, তিনি কোনো একজন ছাত্রের বাবা। তার ছেলে নিখোঁজ। ছেলেকে খুঁজে দিতে হবে বলেই তিনি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভয় দেখাচ্ছেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পুলিশ ওই বন্দুকধারীকে শান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। এরই মধ্যে বন্দুকের নল উপেক্ষা করে এক পুলিশকর্মী গিয়ে ওই ব্যক্তিকে জাপটে ধরেন। পেছনে ছুটেন বাকি পুলিশকর্মীরাও। আগ্নেয়াস্ত্রগুলো উদ্ধার করে আটক করা হয় ওই ব্যক্তিকে। অন্য পুলিশকর্মীরা নিরাপদে শিক্ষার্থীদের ক্লাস থেকে বের করে আনেন। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মালদা থানায়। এ ঘটনা নিয়ে স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, আমি বাংলা ক্লাস নিচ্ছিলাম। ক্লাস সেভেনে। ক্লাসে ৭০ থেকে ৮০ জন শিক্ষার্থী ছিল। তখন সেই যুবক প্রবেশ করে। সে জানায়, তার ছেলে নিখোঁজ। তাই তিনি এসেছেন। নিজের ছেলেকে দেখতে না পেলে তিনি বাচ্চাদের ক্ষতি করবেন। আমাকে বন্দুক দেখিয়ে বলে, একদম নড়বেন না চুপ থাকুন। শিক্ষার্থীদেরও বন্দুক দেখিয়ে হুমকি দেয়া হয়। এমনকী বোমা বিস্ফোরণের হুমকি দেয়া হয়। তবে তাকে পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্যহীন বলা যাবে না। এদিকে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের দাবি, ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন। স্থানীয়রা জানিয়েছে ওই যুবকের নাম দেব বল্লভ রাই। তিনি স্থানীয় বিজেপি কর্মী। জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে কেন ওই ব্যক্তি বন্দুক নিয়ে স্কুলে ঢুকলেন তা জানার চেষ্টা চলছে। বন্দুকগুলো আসল কিনা তাও জানার চেষ্টা চলছে এবং ওই ব্যক্তির সঙ্গে থাকা বোতলে কী তরল রয়েছে সেটাও পরীক্ষা করে দেখা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। মালদা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এর আগেও এই বন্দুকধারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকি দিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন পশ্চিমবঙ্গে | স্কুলে | বন্দুকধারীর | হামলা