প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) অভ্যন্তরীণ সড়কে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। ফলে কাজের মান এবং সচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা। তবে সড়কের এমন বেহাল অবস্থায় ভ্রুক্ষেপহীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে অভ্যন্তরীণ রাস্তাগুলোর নিয়মিত তদারকির অভাব, নিয়ম ভঙ্গ করে অতিরিক্ত ওজনের ট্রাক প্রবেশসহ রাস্তার জন্য যে শিডিউল করা হয়েছিল, সে মোতাবেক দায়িত্বরত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করেনি বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। তারা নিজের মতো করে কাজ করেছেন, এতে রড- সিমেন্টের আস্তরণ ক্ষয় হয়ে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে উঁচু-নিচু তৈরি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
সম্প্রতি সড়কটির অন্তত ৩০ টি স্থানে ছোট বড় ফাঁটল দেখা যায়। এরমধ্যে ক্ষয় ও ফাঁটলের বিরাট একটা অংশ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার সামনে। এ ছাড়া মুক্তমঞ্চ, কেন্দ্রীয় মসজিদ, শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন স্থানে এ ফাটল দেখা দিয়েছে। এর আগেও এসব ফাঁটল স্থানে সংস্কার করে কর্তৃপক্ষ । তবে সেটি তেমন সুফল বয়ে আনেনি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক হতে প্রশাসনিক ভবন, গ্যারেজের সড়ক, গোল চত্বর পর্যন্ত সড়কে ৭ ইঞ্চি করে ঢালাই, গোল চত্বর হতে ক্যাফেটেরিয়া পর্যন্ত সড়কে ৬ ইঞ্চি করে ঢালাই এবং অবশিষ্ট শহীদ মিনার পর্যন্ত সড়কে ৫ ইঞ্চি ঢালাইয়ের মাধ্যমে ৮২৭ দশমিক ৪৬ কিউবিক মিটার আরসিসি সড়ক নির্মাণ, ৩টি কালভার্ট, আরসিসি ও ব্রিকস ড্রেন, পূর্বের পরিবহন মাঠের পাশে বসার সিঁড়ি, সড়কের নীচে পাইপ স্থাপন এবং রাস্তার সাপোর্টিং গার্ডওয়াল নির্মাণের জন্য মোহাম্মদ ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স (প্রা.) লিমিটেড নামক একটি কোম্পানীকে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭৮ হাজার ৭৭৬ টাকার কার্যাদেশ দেয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য বর্ধনের যে সড়কটি নির্মাণের এত সল্প সময়ের মধ্যে ফাঁটল দেখা দেয়ায় কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে আজকে সড়কের এই বেহালদশা। এছাড়া যথাযথ পরিকল্পনা না করে, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। যার কারণে এত তাড়াতাড়ি সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ফাঁটল সৃষ্টি হয়েছে।
ইঞ্জিনিয়ার এস. এম. শহীদুল হাসান বলেন, আমরা এ বিষয়টা নিয়ে ঈদের আগে ফাইল জমা দিয়েছি। আমরা বাজেট বরাদ্দ ফেলে কাজ করতে পারবো। যদি কর্তৃপক্ষ মনে করে এসব সংস্কারের কাজ গুলো করা গুরুত্বপূর্ণ তাহলে বরাদ্দ ফেলে কাজ শুরু করা যাবে।
এত অল্প সময়ের মধ্যে রাস্তার এমন অবস্থা কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে আমাদের ব্যবহারের একটি মাত্র রাস্তা। এই রাস্তাটির কাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে ইট, বালি ও রড ভর্তি ট্রাক ঢুকে আরও বেশি বেহাল অবস্থা হয়ে গেছে।
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের সাথে কথা বলতে দপ্তরে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি।