বিয়ে নিয়ে কতো জল্পনা কল্পনা। বিয়ে করতে গেলে কোন বাহনে যাবো সেটা নিয়ে চলে নানা রকম প্লান। কেউ বিয়ে করতে যাচ্ছেন হেলিকপ্টার ভাড়া করে। আবার কেউবা মোটরসাইকেল করে বউ নিয়ে আসছেন। কেউ ঘোড়া চড়েও বিয়ে করতে যাচ্ছেন এমন ঘটনা ঘটছে হরহামেশাই।
তবে এবার ঘটেছে অন্যরকম এক ঘটনা। ঠাকুরগাঁওয়ের খামার নারায়নপুর গ্রামের এক যুবক বিয়ে করতে গিয়েছিলেন গরুর গাড়িতে চেপে। সেই সময়েই পুরানো দিনের প্রথাতেই ফিরে গেলেন বাংলাদেশের যুবক মহম্মদ নীরব।
গোরু এবং মহিষের গাড়িতে করে পাত্র যে বিয়ে করতে আসছেন তা জানতেন না কনের বাড়ির লোকজন। বর এবং বরযাত্রীদের গরু এবং মহিষের গাড়িতে আসতে দেখে অবাক হয়ে যান।
তবে, গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়ার এই ‘ঐতিহ্য’কে ফিরিয়ে আনার এই উদ্যোগ দেখে খুশি হন তারাও।
শুক্রবার (২৬ মে) এই ভাবেই বরযাত্রীদের সঙ্গে নিয়ে বিয়ে করতে গিয়েছিলেন নীরব।
তিনি জানান, তার বাবার ইচ্ছা পূরণ করতেই এইভাবে বিয়ে করতে যান তিনি। আর এ জন্যই ভাড়া করা হয় গরু এবং মহিষের গাড়ি।
এদিকে, গোরুর গাড়ি চেপে বর বিয়ে করতে এসেছে শুনে তাকে এবং তাদের দেখতে ভিড় করেন এলাকার লোকজন। ঠাকুরগাঁওয়ের দুর্গাপুর গ্রামে বিয়ে করতে গিয়েছিলেন নীরব। দুর্গাপুর গ্রাম নীরবের গ্রামের পাশেই। তার সঙ্গে বিয়ে হয় ইসরাত জাহান এশার। এমন আয়োজন দেখে খুশি হন ইশাও।
নীরবের বাবা কুদ্দুস আলী জানান, তার ইচ্ছা ছিল ছেলের বিয়েতে বরযাত্রীরা যাবেন গরুর গাড়িতে চেপে।
তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে গোরুর গাড়ি পাওয়া খুবই কষ্টের। তাই নটি মহিষের এবং একটি গরুর গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়।
এশার কাকা জয়নাল বলেন, এটা গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া একটি ঐতিহ্য। আগে তো সবাইকে গোরুর গাড়িতেই যেতে হত। এই রকম আয়োজন করায় আমরা খুবই খুশি।
বরযাত্রী দলে থাকা একজন জানান, প্রায় ৪০ বছর আগে এক প্রতিবেশির বিয়েতে এই ভাবেই গিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন পরে তার আবার একই রকম অভিজ্ঞতা হল।
নারায়ণপুর গ্রামে আলম নামে এক ব্যক্তি জানান, তিনি বাবার কাছে শুনেছেন যে তার দাদুর বিয়েতে বরযাত্রী ও বর গরুর গাড়িতে করে গিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, এই রকম যে আবার দেখবে পাব তা ভাবিনি। হারিয়ে যেতে বসা সেই ঐতিহ্য দেখতে পাওয়ায় খুবই ভালো লেগেছে।