ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইভিএমের ওপর আস্থা রাখতে পারেনি মিশা-জায়েদ ও ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদ। পরে বাধ্য হয়েই চাপের মুখে নির্বাচন কমিশনারদের ব্যালট পেপারকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। জানালেন শিল্পী সমিতির প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন।
শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচন শেষে এবার ভোট গণনায় দীর্ঘ সময় ব্যয় করা নিয়ে নতুন বিতর্কে মেতেছে সিনেমহলসহ অনেকে। মাত্র ৩৬৫ ভোট গুনতে সারারাত কী করে অতিবাহিত হয়ে যায়! ইভিএম পদ্ধতির সুবিধা কেন নেওয়া হলো না! সে প্রশ্ন অনেকের।
সহ-সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা অভিনেতা ডিএ তায়েবের ভোটবর্জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে নিপুণের ফের ভোট গণার আপিলের বিষয়টিকে আরও তাঁতিয়ে তুলেছে।
শহীদুল হারুন বলেন, ইভিএমে ভোটগ্রহণ চললে বড়জোর এক ঘণ্টা লাগতো ভোটের ফল জানাতে। বাড়তি কোনো ঝামেলাও থাকত না। এজন্য এক লাখ টাকা বাড়তি খরচ হতো। টাকাও হাতে ছিল। কিন্তু মিশা-জায়েদ ও ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের সদস্যরা ইভিএমে বিশ্বাসী নন। এটিতে নাকি ভোট চুরি হয়। তারা ব্যালট পেপারেই ভোটগ্রহণে একমত হন। তাই বাধ্য হয়েই ব্যালট পেপার বেছে নিতে হয়েছে। ভোট গণনায়ও দেরি হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, আসলে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়ার দিকে। বাইরে থেকে সরাসরি মনিটর করে দেখো যায় যে, ভেতরে কী হচ্ছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সব কাজ শেষ করা হয়েছে। কোনো বিতর্ক তৈরি হয়নি। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে দেরি হয়েছে। ফলাফল দেরিতে প্রকাশ হলেও সবাই সন্তুষ্ট।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মতো ইলেকট্রনিক ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করলেই তো ফল পেতে দীর্ঘ রাত অর্ঘুম থাকতে হতো না। শিল্পী সমিতির নির্বাচনে কেন এই ডিজিটাল পদ্ধতির সুবিধা নেওয়া হয়নি?
এরপরও একই প্রশ্ন থেকেই যায় - শুক্রবার বিকাল ৫টায় শেষ হওয়া ৩৬৫ ভোটের ফলাফল দিতে শনিবার ভোর ৪টা লেগে গেল?
এত সময় লাগার ব্যাপারে পীরজাদা শহীদুল হারুণ ব্যাখ্যা দেন, হাতে গণনার জন্য পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ লোককে দায়িত্ব দেওয়া হলেও এর চেয়ে কম সময়ে ভোট গণনা সম্ভব না। ভোট দান শেষে নিজেদের জন্য অল্প কিছু সময় নিয়েছি। ভোট গণনায় যেন তাড়াহুড়া না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছে। আপিল বিভাগে যেন কোনো বিতর্কের সৃষ্টি না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হয়েছে। ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ ও মিশা-জায়েদের দুই প্যানেল ভোট গণনা নিয়ে সন্তুষ্ট, তারপর ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত এবার শিল্পী সমিতির মোট ভোটার ছিলেন ৪২৮ জন। তবে ব্যালটবাক্সে ভোট জমা পড়েছে ৩৬৫টি। মোট ভোট পড়েছে ৮৫ দশমিক ২৮ শতাংশ।
এর মধ্যে কার্যকরী পরিষদের সদস্যপদে বাতিল হয়েছে ১০টি ভোট৷ আর সম্পাদকীয়তে বাতিল হয়েছে ২৬টি ভোট৷ ভোট দেওয়ার জন্য দুটি করে ব্যালট পেপার ছিল। ভোট গণনার সময় উপস্থিত ছিলেন দুপক্ষের আটজন অভিনয়শিল্পী।
এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে অভিনেতা মিশা সওদাগর এবং সাধারণ সম্পাদক পদে চিত্রনায়ক জায়েদ খান এক প্যানেল থেকে নির্বাচন করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলে সভাপতি পদে অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার নির্বাচন করেন। সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চন ও সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খান জয়ী হয়েছেন। সহসভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন ডিপজল ও রুবেল।
তাসনিয়া রহমান