মালয়েশিয়ায় পড়তে গিয়ে লাশ হয়ে দেশে ফিরলেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ইরফান সিদ্দিক। গেলো (১৯ সেপ্টেম্বর) দেশটির সারাওয়াক প্রদেশের কুচিং নামক শহরের একটি মসজিদের পাশের নদীতে মিলেছে ইরফানের লাশ। ইরফান নদীতে ডুবে মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান থেকে তার মরদেহ নামানো হয়েছে।
মালয়েশিয়ার গণমাধ্যম বেরিতা হারিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বিকাল ৪টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান পাদুঙ্গান ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ স্টেশন (বিবিপি) এবং পিপিডিএ বাটু লিন্টাংয়ের বেশ কয়েকজন কর্মী। বিকাল ৫টা ৫৬ মিনিটে ওয়াটার রেসকিউ টিম (পিপিডিএ) ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩ মিটার দূরে তাকে খুঁজে পায়। পরে রেসকিউ টিম তার মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশের একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এ লেভেল সম্পূর্ণ করে উচ্চশিক্ষার জন্য মালয়েশিয়ার সারাওয়াক প্রদেশের কুচিং শহরে পাড়ি জমান ইরফান সিদ্দিক। প্রায় ১ বছর আগে দেশটির সুইনবার্ন ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হন তিনি।
ইরফানের পরিবারের দাবি, সহপাঠীদের নির্মম নির্যাতনের কারণেই মৃত্যু হয়েছে তার। ইরফানের বাবা জানান, মৃত্যুর আগে ফোনে পরিবারের কাছে সব কিছু বলেছেন তিনি। ইরফান তার বাবাকে বলেছেন, তার বন্ধুরা তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে।
মালয়েশিয়ার একটি মসজিদের বারান্দায় অনেকটা বিবস্ত্র করেই দেয়া হচ্ছে র্যাগিং-এমন একটি ভিডিও হাতে পাওয়ার দাবি করেছে তার পরিবার। র্যাগিং এর পর পরিবারকে ফোন দিয়ে দেশে ফিরে আসার আকুতি জানান ইরফান। তার পরিবারও নিতে শুরু করে প্রস্তুতি, কিন্তু বিধি বাম। এরপর থেকেই বন্ধ পাওয়া যায় ইরফানের ফোন। কয়েকঘণ্টা পর পরিবারকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, পানিতে ডুবে মারা গেছেন ইরফান।
নিহতের স্বজনরা জানান, শেষ ৩ দিন ইরফান মসজিদে ছিল। সবার কাছে মাফ চেয়েছে, ভয়েস কলের মধ্যে বা যাদের কলে পেয়েছে তাদের কাছে সব বলেছে। তার মামাকে বলেছে, আমাকে বাঁচান। পরিবারের অভিযোগ, সহপাঠীদের নির্মম নির্যাতনের বলি হয়েছে ইরফান।
এএম/