সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের ভাট দিঘুলিয়ার চর গ্রাম থেকে রাতে এক সন্তানের জননী গৃহবধূ রেহেনা খাতুনের(২৪) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকালে ময়না তদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনালের হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয় মরদেহ। এর আগে, মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের মা, বাবা,ভাই ও আত্নীয় স্বজনের অভিযোগ তাকে যৌতুকের দাবীতে পিটিয়ে ও গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধে স্বামী, শ্বাশুরি, শ্বশুর, দেবর, ভাশুর ও ননদ হত্যা করছে। এ ঘটনার পর তারা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে নিহতের মা জহুরা খাতুন বলেন, ৫ বছর আগে পারিবারিক ভাবে ৭০ হাজার টাকা যৌতুকের বিনিময়ে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের ভাট দিঘুলিয়ার চর গ্রামের সেরাজ সরকারের ছেলে সেলিম সরকারের সাথে বেলকুচি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের খলিল সিকদারের মেয়ে রেহেনা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আরও যৌতুকের দাবীতে প্রায়ই আমার মেয়ে রেহেনা খাতুনকে তার স্বামী,শ্বশুর, শ্বাশুরি, দেবর, ভাশুর ও ননদ মারপিট ও নির্যাতন করে আসছিল। মেয়ের সুখের জন্য আমরা একাধিকবার এ নিয়ে শালিশ বৈঠক করে সংসার করতে দেই। ঘটনার ২/৩ দিন আগে থেকে তারা আবারও যৌতুকের দাবীতে আমার মেয়েকে মারপিট ও নির্যাতন করতে থাকে। রেহেনা এর প্রতিবাদ করলে তাকে সবাই মিলে মারপিট ও গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
এরপর নিহতের শ্বাশুরি বাড়িতে উপস্থিত থেকে এটি আত্মহত্যা বলে অপপ্রচার শুরু করে। এ ঘটনায় পুলিশে খবর দিলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নিহতের শ্বাশুরি মনোয়ারা খাতুন কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে এ ঘটনায় ঘাতক স্বামী সেলিম সরকার(২৭), শ্বাশুরি মনোয়ারা খাতুন(৫০), শ্বশুর সেরাজ সরকার((৬০),দেবর ইউসুফ আলী(২৩) ও ননদ উর্মি খাতুন(২২),ভাশুর রমজান আলী(৩৫) ও চাচা পিয়ার সরকার(৬২) আসামী করে নিহতের মা জহুরা খাতুন বাদী হয়ে শাহজাদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি খায়রুল বাসার বলেন, এ ঘটনায় নিহতের মা জহুরা খাতুন একটি এজাহার করেছে। তবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা আমরা নিশ্চিত নই। তাই মামলাটি ৩০৬ রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে আজ সকালে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনালের হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি। ময়না তদন্তের রিপিার্ট হাতে পেলে সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।