আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

মহিউদ্দিনের শেষ কথা ছিলো ‘তোমরা আমাকে মাফ করে দিয়ো’

মহিউদ্দিনের শেষ কথা ছিলো ‘তোমরা আমাকে মাফ করে দিয়ো’

‘ভাইরে, পুড়ে যাচ্ছি, মরে যাচ্ছি। আমার চেহারা শেষ। তোমরা আমাকে মাফ করে দিয়ো।’  মৃত্যুর ঠিক আগ মুহূর্তে মো. মহিউদ্দিনের (২০) এটাই ছিলো শেষ কথা।  ভাইদের সঙ্গে  ভিডিও কলে এ কথা বলতে বলতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।

মহিউদ্দিন চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছড়ি ইউনিয়নের নাপোড়া গ্রামের আহমদুর রহমানের ছেলে। বছর চারেক আগে সীতাকুণ্ডের দুর্ঘটনাকবলিত বিএম কনটেইনার ডিপোতে চাকরি নেন তিনি। কিছুদিনের মধ্যে তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এসব তথ্য জানা গেছে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে।

মহিউদ্দিনের বড় বোন শারমিন আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, মহিউদ্দিনের জন্মের এক বছরের মধ্যে আমাদের মা মারা যান। বড় কষ্ট করে তাকে বড় করেছি আমরা। কিন্তু আজ তাকে হারালাম।

তিনি জানান, তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে মহিউদ্দিন সবার ছোট। চার বছর আগে তিনি চাকরি শুরু করেন।

দুর্ঘটনার পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মহিউদ্দিনের লাশ আনতে যান তার দুই ভাই শাহাবুদ্দিন ও আব্বাস। শাহাবুদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবার রাতে ঘটনার পরপরই ভিডিও কল দেয় মহিউদ্দিন। তখন সে শুধু বলছিল, ‘ভাইরে, পুড়ে যাচ্ছি, মরে যাচ্ছি। আমার চেহারা শেষ। তোমরা আমাকে মাফ করে দিয়ো।’ এর এক ঘণ্টা পর আমার ভাইয়ের লাশ পাওয়া যায় ঘটনাস্থলে।

উল্লেখ্য, গেলো শনিবার (৪ জুন) রাত পৌনে ১১টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কনটেইনার ডিপোতে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ। হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিকদের পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রয়েছেন। আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এ অবস্থায় ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে অভিযানে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল।

মির্জা রুমন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন মহিউদ্দিনের | শেষ | কথা | ছিলো | আমাকে | মাফ | করে | দিয়ো