রাজশাহীর বাঘার আড়ানী পৌরসভার মেয়র মুক্তার আলীকে ফের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিম্ন আদালতে জামিন না নেয়ায় অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজি মামলায় আড়ানী পৌরসভার মেয়র মুক্তার আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গেলো সোমবার (৬ জুন) দিবাগত রাত ১২ টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার (৭ জুন) দুপুরে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা শাখা পুলিশের ওসি আতিক আহমেদ বলেন, সোমবার (৬ জুন) দিবাগত রাত ১২টার দিকে মেয়র মুক্তারের নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিলেও সেটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু মুক্তার পরে আর নিম্ন আদালত থেকে জামিন না নেওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি আড়ানী পৌরসভা নির্বাচনের সময় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন মুক্তার আলী। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহিদুজ্জামান শাহিদকে পরাজিত করে মুক্তার আলী মেয়র নির্বাচিত হন। বোমাবাজি, হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে প্রথমে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এর পর গত বছরের ৬ জুলাই দিবাগত রাত ১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত আড়ানী পৌর এলাকার পিয়াদাপাড়া মহল্লায় মেয়র মুক্তারের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ।
এ সময় মেয়র মুক্তার আলীর বাড়ি থেকে প্রায় কোটি টাকা, অস্ত্র এবং মাদক উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে একটি অবৈধ বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটার গান, দেশীয় তৈরি একটি বন্দুক, একটি এয়ার রাইফেল, শটগানের ২৬ রাউন্ড গুলি, চারটি পিস্তলের ম্যাগজিন, পিস্তলের ১৭ রাউন্ড গুলি, চারটি গুলির খোসা, ১০ গ্রাম গাঁজা, সাত পুরিয়া হেরোইন, ২০ পিস ইয়াবা, নগদ ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা এবং মেয়রের দুটি সই করা চেক জব্দ করা হয়। চেকে টাকার পরিমাণ ছিল ১৮ লাখ।
এদিকে মেয়র মুক্তারের স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৪০) এবং দুই ভাতিজা সোহান (২৫) ও শান্তকে (২৩) আটক করে পুলিশ। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান মুক্তার আলী। পরে তাকে আটক করা হয়। এরপর তাকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তিতে মুক্তারকে নাটোর থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের তিনি দীর্ঘদিন কারাবরণ শেষে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন। কিন্তু উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে তিনি আবারও পদ ফিরে পান এবং বাঘার আড়ানী পৌরসভার দায়িত্বে বসেন।