কলকাতায় একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবন ভেঙে পড়ে নারীসহ ৫ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও ২১ জন। মৃতদের মধ্যে দুজন নারীর পরিচয় পাওয়া গেছে। নাম সামা বেগম (৪৭) এবং হাসিনা খাতুন (৫৫)। রোববার (১৭ মার্চ) স্থানীয় সময় রাত ১২টার সময় কলকাতা পুরসভার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
পাশাপাশি ভবন ধসের ঘটনায় ধ্বংসস্তূপের নিচে ২১ জনের মতো চাপা পড়েছে। এর মধ্যে ১২ থেকে ১৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৭ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা ছয় জন এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছে।
ঘটনা্র পর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দমকল বিভাগ ও সিভিল ডিফেন্স কর্মী ছাড়াও এনডিআরএফ (ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স) উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছে।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ভবন ধসের ঘটনায় ধ্বংসস্তূপের নিচে ২১ জনের মতো চাপা পড়েছে। এর মধ্যে ১২ থেকে ১৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৭ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা ছয় জন এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছে।
আহতদের মধ্যে ১০ জনকে স্থানীয় নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের চিকিৎসা চলছে এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে। বাড়িটি নির্মীয়মাণ হওয়ায় সেখানে কেউ ছিলেন না। কিন্তু পাশের যে বস্তি এলাকার ঝুপড়িতে বহুতলটি ভেঙে পড়ে সেখানেই বহু মানুষ আহত হয়েছেন। রাত থেকে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে চলছে উদ্ধারকাজ।
বহুতলের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে এখনও ছ’জন আটকে রয়েছেন। এমনটাই জানানো হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দলের পক্ষ থেকে। তবে সেই ছ’জনের মধ্যে এক জনের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। বাকিদের থেকে কোনও সাড়া পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারীরা।
এ ঘটনার পর সকাল ১০টা নাগাদ মাথায় ব্যান্ডেজ বাধা অবস্থায় ঘটনাস্থলে পৌঁছান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাত থেকে ঘটনাস্থলে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্য পরিচালনা করছেন কলকাতা পৌরসভার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। রাতেই ঘটনাস্থলে আসেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল সহ উচ্চপদস্থ কর্তারা। রাত ৩টার দিকে পৌঁছায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। এরপর উদ্ধারকাজে আরও গতি আসে।
এদিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রমজান মাসে এমন একটা দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় আমরা সকলে অত্যন্ত মর্মাহত। অত্যন্ত ঘিঞ্জি এলাকা এটা এবং বেআইনি কাজের জন্য এই ঘটনা ঘটল। উদ্ধারকাজ দ্রুত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান রোববার ওই বহুতলের পাঁচতলার ঢালাইয়ের কাজ হয়েছিল। এরপর রাতেই বহুতলটি ভেঙে পড়ে। কলকাতার গার্ডেনরিচ অঞ্চলটি ইসলাম ধর্মালম্বী মানুষের বসবাস বেশি। দুর্ঘটনা নিয়ে এলাকাবাসী অভিযোগ, এখানে একসময়ে পুকুর ছিল। সেসব ভরাট করে একের পর এক বহুতল নির্মিত হওয়ার ফলেই এমন বিপদ।
ইতিমধ্যেই আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যের হাতে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ ও ৫ লাক রুপি করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।