কারাগারে বন্দী আসামি চিকিৎসা বা কোনও নিকট আত্মীয় মারা গেলে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে থাকেন। এ ক্ষেত্রে দেয়ার রেওয়াজও রয়েছে। কখনও কি শুনেছেন শুধুমাত্র দাম্পত্য কিংবা যৌন সম্পর্ক বজায় রাখার প্রয়োজনে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করতে?
হ্যাঁ, ঘটনাটি এরকমই। সম্প্রতি তার সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং সন্তানধারণের প্রয়োজনে প্যারোলে মুক্তির আবেদন জানিয়েছিলেন ওই বন্দী। পরে আদালত জানিয়ে দিলেন- লিভ-ইন সঙ্গীর সঙ্গে যৌনতার প্রয়োজনে কোনও দোষীকে প্যারোলে মুক্তি দেয়া যাবে না। শুধুমাত্র দাম্পত্য কিংবা যৌন সম্পর্ক বজায় রাখার প্রয়োজনে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়া কোনও ব্যক্তিকে প্যারোলে মুক্তি দেয়ার আইন নেই। স্ত্রী এবং লিভ-ইন সঙ্গী— উভয়ের ক্ষেত্রেই নিয়ম সমান। ঘটনাটি ভারতে। একটি মামলায় এমনটাই জানালো ভারতের দিল্লি হাইকোর্ট।
গুরুতর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে যাবজ্জীবন জেল খাটছেন আসামি। যদিও আবেদনে সঙ্গীকে তিনি স্ত্রী হিসেবেই দাবি করেছিলেন। পরে জানা যায়, ওই ব্যক্তির আইনত বৈধ স্ত্রী রয়েছেন। তিন সন্তানও রয়েছে তাদের। এর পরেও এক মহিলার সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তার। সেই সঙ্গীকেই পরিবার হিসাবে দেখাতে চেয়েছিলেন।
আদালতে ওই ব্যক্তির তরফে জানানো হয়, স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং সন্তানধারণ তার মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। স্বামী দোষ করেছেন বলে তার স্ত্রীকে ওই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। আদালত শুনানি চলাকালীন জানতে পারে, ওই মহিলা আদৌ ব্যক্তির স্ত্রী নন। আইনত বৈধ স্ত্রীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদও হয়নি। এর পরেই বিচারপতি স্বরণকান্ত শর্মার পর্যবেক্ষণ, ‘‘ভারতীয় আইন কোনও ব্যক্তিকে দাম্পত্য সম্পর্ক রক্ষা করার জন্য প্যারোলের অনুমতি দেয় না। লিভ-ইন সঙ্গীর সঙ্গে তো একেবারেই নয়। ব্যক্তির স্ত্রী জীবিত থাকতে লিভ-ইন সঙ্গী সন্তানধারণের মৌলিক অধিকারও দাবি করতে পারেন না। তিনি আইনত ওই ব্যক্তির ‘পরিবারভুক্ত’ নন।’
আদালত এ-ও জানায়, যদি এই মামলাটিতে প্যারোলের অনুমতি দেওয়া হয়, তবে আগামী দিনে ভূরি ভূরি এমন আবেদন জমা পড়বে। সব বন্দিই লিভ-ইন সঙ্গী জোগাড় করে আদালতের দ্বারস্থ হবেন। সকলকেই সে ক্ষেত্রে প্যারোলের অনুমতি দিতে হবে। যা সম্ভব নয়। তাই এই আবেদন খারিজ করে দেয়া হয়েছে।
জেএইচ