বয়সের সঙ্গে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধির কোনো সম্পর্ক নেই। এখন অল্পবয়সিদের শরীরেও হানা দিচ্ছে কোলেস্টেরলের সমস্যা। রাত জাগার অভ্যাস, বাইরের খাবারের প্রতি ঝোঁক, প্রক্রিয়াজাত খাবারের উপরে অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা, শরীরচর্চার প্রতি অনীহা— সব মিলিয়ে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তে বাধ্য।
কোলেস্টেরল থেকে যত দিন দূরে থাকা যায়, ততই ভাল। কারণ, কোলেস্টেরলের হাত ধরে শরীরে হানা দেয় হৃদ্রোগ। তবে কেবল খাওয়াদাওয়ায় রাশ টানলে এই রোগের হাত থেকে নিস্তার নেই, রোজের অভ্যাসেও আনতে হবে কিছু বদল। ঘুম থেকে উঠে কোন কোন কাজ করলে কোলেস্টেরল থাকবে নিয়ন্ত্রণে, রইল তার হদিস।
১. ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে লেবু পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন। লেবুতে থাকা ভিটামিন সি, ফ্ল্যাভোয়েড যৌগ লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিনের সঙ্গে লড়াই করে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
২. প্রাতরাশ না করে ঘর থেকে বেরোনো যাবে না। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সকালের খাবারে বেশি করে ফাইবারযুক্ত খাবার রাখতে হবে। হোল গ্রেন, বেশি করে ফল ও শাকসব্জি খেতে হবে। কোলেস্টেরল বাগে আনতে খেতে পারেন ওট্স, কাঠবাদাম, তিসির বীজের মতো খাবারগুলি। ট্রান্সফ্যাট আছে এমন খাবার, অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার বা পানীয় খাওয়া যাবে না। দুধ চায়ের বদলে গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
৩. নিয়মিত শরীরচর্চা কমাতে পারে কোলেস্টেরলের মাত্রা। পাশাপাশি, শরীরচর্চা করলে নিয়ন্ত্রণে থাকে স্থূলতাও। শরীরচর্চা বলতে কিন্তু শুধু জিম নয়, নিয়মিত হাঁটা কিংবা জগিং, সাইকেল চালানো ও সাঁতারের মতো অভ্যাসও সহায়তা করতে পারে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে। রোজ সকালে অন্তত আধ ঘণ্টা সময় শরীরচর্চার জন্য বরাদ্দ রাখুন।
৪. ঘুম থেকে উঠে সুখটান না দিলে অনেকের সকাল শুরু হয় না। ধূমপান শুধু ফুসফুসের ক্ষতি করে না, বাড়িয়ে দেয় ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রাও। তাই এই অভ্যাসেও রাশ টানতে হবে।
৫. মানসিক চাপ বাড়লেও কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় শরীরে। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে খানিকটা সময় যোগাসন ও ধ্যানের জন্য বরাদ্দ রাখুন। নিয়ম করে এই কাজ করলে মানসিক চাপ থেকে মুক্ত হওয়া যায়। কোলেস্টেরল কমাতে হলে মনকে শান্ত রাখা ভীষণ জরুরি।
কোলেস্টেরল থাকলে নির্দিষ্ট সময় পর পর রক্ত পরীক্ষা করানো জরুরি। তা হলেই কিন্তু রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সতর্ক থাকা সম্ভব। সতর্ক না হলে কিন্তু রোগকে জব্দ করা যাবে না, এই রোগের হাত ধরে হৃদ্রোগেরও ঝুঁকি বাড়ে। তাই সবার আগে চাই সতর্কতা।
কেএস/