রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে আরিফুল ইসলাম নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। পুলিশের ধারণা, তার স্ত্রী পারভীন আক্তার তাকে হত্যা করে কানাডায় চলে গেছেন।
শনিবার (১ জুন) রাত আটটার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আরিফুল ইসলাম জাপান প্রবাসী। তার স্ত্রী পারভীন আক্তার কানাডায় থাকেন। গেলো ১৭ মে তারা দু’জন ভাটারা থানার ‘মাটি প্রপার্টিজ’ নামের অ্যাপার্টমেন্টটি ভাড়া নেন। আরিফুলের মরদেহ উদ্ধারের সময় একটি চিরকুট ও বিয়ের কাবিন নামা উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার করা চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আমার জীবনের শান্তি নষ্ট করে দিয়েছে এই রেপিস্ট। ব্ল্যাকমেইলার সে। তার নিজের ইচ্ছায় আমার হাতে ধরা দিয়েছে। নিজের হাতে এই রেপিস্ট-ব্ল্যাকমেইলারকে মেরে শাস্তি দিলাম।’
থানা সূত্রে জানা গেছে, ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সি-ব্লকের দুই নম্বর রোডের ১ নম্বর বাসায় অবস্থিত ওই অ্যাপার্টমেন্টে দেশি-বিদেশি নাগরিকরা অনলাইনে স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়ে থাকেন।
গেলো ১৭ মে আরিফুল ও পারভীন স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে দ্বিতীয় তলায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট অনলাইন অ্যাপসের মাধ্যমে সাত দিনের পেমেন্ট করে ভাড়া নেন।
শনিবার মাটি প্রপার্টিস থেকে ফোন করে পুলিশকে জানায় দোতালার অ্যাপার্টমেন্টে একজন পুরুষের মরদেহ পাওয়া গেছে।
তাৎক্ষণিক ভাটারা থানা পুলিশ ও অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। সিআইডি ক্রাইম সিন পর্যবেক্ষণ করে জানায়, মরদেহের বুকে ও গলায় ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
অ্যাপার্টমেন্টের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ১৮ মে সকাল ৬টা ৩১ মিনিটে পারভীন আক্তার একা বেরিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, পারভীন ১৭ মে কানাডা থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এসে নামেন। পরদিন সর্বশেষ তার ফোনের অবস্থান ছিলো হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। এতেই ধারণা করা হচ্ছে, আরিফুলকে হত্যার পর পারভীন কানাডায় ফিরে গেছেন।
হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত বলে ধারণা পুলিশের। চিরকুট, সিসিটিভি ফুটেজ ও সিডিআর বিশ্লেষণ করে প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, পারভিন আক্তার দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকে আরিফুলকে হত্যা করেছে। বিস্তারিত তথ্যের জন্য পারভিনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে পুলিশ।
কেএস/