রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে শিশুসহ পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় আরও তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি দেয়া আসামিরা হলেন - মূল ক্রেনচালক আল-আমিন, তার সহকারী রাকিব ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সেফটি ইঞ্জিনিয়ার মো. জুলফিকার আলী শাহ।
গেলো সোমবার (২২ আগস্ট) রিমান্ড শেষে আট আসামির মধ্যে তিনজন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি রেকর্ড করা শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া চার আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
অন্যদিকে, শুনানি শেষে চার আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শুভ্রা চক্রবর্তীর আদালত। একইসঙ্গে আসামি মঞ্জুরুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়েছে।
জামিন পাওয়া আসামিরা হলেন- ইফসকন বাংলাদেশ লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মো. ইফতেখার হোসেন, হেড অব অপারেশন মো. আজহারুল ইসলাম মিঠু, বিল্ড ট্রেড কোম্পানির মার্কেটিং ম্যানেজার তোফাজ্জল হোসেন ওরফে তুষার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা রুহুল আমিন মৃধা।
এর আগে এ মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ফোর ব্রাদার্স গার্ড সার্ভিসের ট্রাফিক ম্যান মো. রুবেল ও মো. আফরোজ মিয়া।
উল্লেখ্য, গেলো ১৫ আগস্ট বিকেলে উত্তরা জসীম উদ্দীন এলাকায় আড়ংয়ের সামনে ক্রেন দিয়ে একটি গার্ডার ওপরে ওঠানো হচ্ছিল। এ সময় ক্রেন উল্টে সেটি প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে। গার্ডার পড়ে প্রাইভেটকারটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে প্রাইভেটকারের ভেতরে থাকা সাতজনের মধ্যে পাঁচজন নিহত হয়। নিহতরা হলেন - রুবেল (৬০), ফাহিমা (৪০), ঝরনা (২৮), জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। বেঁচে যাওয়া দুইজন হচ্ছেন নবদম্পতি হৃদয় ও রিয়া মনি। দুজনেই উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রসঙ্গত, ঘটনার রাতেই নিহত ফাহিমা আক্তার ও ঝরনা আক্তারের ভাই মো. আফরান মণ্ডল বাবু বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আসছে ২২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য রয়েছে। গেলো ১৯ আগস্ট এ মামলায় ক্রেনচালকসহ ১০ আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদ। এছাড়া এ ঘটনায় ১০ জনের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গেলো ২১ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসীমের আদালতে এ মামলা করেন নিহত আইয়ুব হোসেন রুবেলের প্রথম স্ত্রী শাহিদা খানম।
মির্জা রুমন