পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় ৪৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছে প্রায় অর্ধশত মানুষ।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে একই দিন দুপুর পর্যন্ত পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলার করতোয়া এবং আত্রাই নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সকাল থেকে উদ্ধার হওয়া ১৬ মরদেহের নাম-পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। এর আগে গতকাল রোববার নারীও শিশুসহ ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তারা হলেন- শ্যামলী রানী (১৪), লক্ষী রানী (২৫), অমল চন্দ্র (৩৫), শোভা রানী (২৭), দীপঙ্কর (৩), পিয়ন্ত (২.৫), রুপালী ওরফে খুকি রানী (৩৫), প্রমিলা রানী (৫৫), ধনবালা (৬০), সুনিতা রানী (৬০), ফাল্গুনী (৪৫), প্রমিলা দেবী (৭০), জ্যোতিশ চন্দ্র (৫৫), তারা রানী (২৫), সনেকা রানী (৬০), সফলতা রানী (৪০), হাশেম আলী (৭০), বিলাস চন্দ্র (৪৫), শ্যামলী রানী ওরফে শিমুলি (৩৫), উষশী (৮), তনুশ্রী (৫), শ্রেয়শী, প্রিয়ন্তী (৮), সনেকা রানী (৬০) ও ব্রজেন্দ্রনাথ (৫৫)।
বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনি য়ন পরিষদে স্থাপিত জরুরি তথ্য ও সহায়তা কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানান, সোমবার দুপুরে ১১ শিশু, সাত পুরুষ ও ২১ নারীসহ ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাতজনের মরদেহ ভেসে গিয়েছিল দিনাজপুরের আত্রাই নদীতে। পরে সেখান থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।
পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক সৈয়দ মাহাবুবুল আলম বলেন, সোমবার সকালে দ্বিতীয় দিনের মতো নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী থেকে ডুবুরিদল এসেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিস।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম জানান, সোমবার সকাল ৯টায় দিনাজপুর সদর উপজেলার মাহুদপাড়া পুনর্ভব নদী থেকে এক যুবকের (২৮) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। এটিও করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজের মরদেহ।
খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চিত্ত রঞ্জন জানান, আত্রাই নদীর জিয়া সেতুর কাছ থেকে চার নারী ও দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত সকোর জানান, সোমবার সকালে আত্রাই নদীর কাশিমনগর বাদলা ঘাট থেকে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম সুব্রত রায় (২)। সে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া গ্রামের প্রফুল্ল রায়ের ছেলে।
উল্লেখ্য, রোববার বিকেলে মহালয়া উপলক্ষে পাঁচপীর, বোদা, মাড়েয়া, ব্যাঙহারি এসব এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নৌকায় করে বদেশ্বরী মন্দিরে যাচ্ছিলেন। এ সময় নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। এ কারণে মাঝ নদীতে পৌঁছানোর পর যাত্রীর চাপে নৌকা ডুবে যায়। এ সময় কিছু মানুষ সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও বেশির ভাগ যাত্রীই এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
তাসনিয়া রহমান