লাইফস্টাইল

নায়ক-নায়িকাদের দামী পোশাকগুলো যায় কোথায়?

বিনোদন ডেস্ক

ছবি: সংগৃহীত

একটা পোশাকের পিছে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বলিউড সেলেবরা। তারপর সেই পোশাক গুলোর কি হয়? একবারের বেশি তো পরতেও দেখা যায়না। আচ্ছা কখনও ভেবে দেখেছেন এটা? বা যে পোশাক গুলি শুটিংয়ের সময় ব্যবহার করা হয় সেগুলিই বা যায় কোথায়? এই যেমন দেবদাসে ‘মার ডালা’ গানে মাধুরীর ঐ আইকনিক লেহেঙ্গা বা হিরোইন ছবিতে কারিনার স্ট্যান্ডিং সব শাড়ি নিশ্চয় নজর কেড়েছে আপনার। তা এসব পোশাক কি আর কাউকে পরতে দেখেছেন? এত দামি দামি ডিজাইনার পোশাক তো আর নিশ্চয় ফেলে দেয়া হয়না।

শুনে হয়ত অবাক লাগতে পারে যে, তারকাদের এইসব পোশাক মোটা টাকায় বিক্রি হয়। আর তাও আবার নিলামে। আর সেই টাকা যায় চ্যারিটিতে‌। এই যেমন, বম্বে ভেলভেট ছবিতে রণবীর এবং অনুষ্কা যেসব পোশাক পরেছিলেন তার অনেকগুলিই চড়া দামে বিক্রি হয়েছিল। শোনা যায় সেই টাকা ডোনেট করা হয়েছিল নেপালের বন্যা আক্রান্তদের জন্য। আপনি কি জানেন, ‘জিনে কে হ্যায় চারদিন’ গানে সালমান যে তোয়ালেটি ব্যবহার করেছিলেন সেটিও এক লাখ বিয়াল্লিশ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

মাধুরীর আইকনিক গ্রীন লেহেঙ্গাও উঠেছিল নিলামে। সেটার দাম শুনলে আকাশ থেকে পড়বেন। শোনা যায় পুরো ৩ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছিল এই লেহেঙ্গাটি। এছাড়াও রোবট ছবিতে রজনীকান্ত আর ঐশ্বরিয়া হেভি কস্টিউমগুলিও বিক্রি হয়েছিল মোটা টাকায়। ওহঃ মাই গড ছবিতে অক্ষয় যে ক্লাসি স্যুটটি পরেছিলেন সেটি বিক্রি হয়েছিল ১৫ লাখ টাকায়। এমনকি ‘লগন’ ছবিতে আমিরের ব্যাটটাও বিক্রি হয়েছিল ১ লাখ ছাপ্পান্ন হাজার টাকায়। আর এই সব টাকা দেয়া হয়েছিল চ্যারিটিতে।

তবে পোশাকগুলি কেবল যে নিলামেই ওঠে তা কিন্তু নয়। অনেক ক্ষেত্রেই এইসব পোশাক পুনরায় ব্যবহারও করা হয়। তবে সেটা মেইন ক্যারেক্টারদের জন্য নয়। বরং ব্যাক গ্রাউন্ড ডান্সার বা জুনিয়র আর্টিস্টদের জন্য। এই যেমন ধরুন, ‘কাজরা রে’ গানটিতে ঐশ্বরিয়া যে লেহেঙ্গা চোলিটি পরেছিলেন, সেটিকেই ব্যবহার করা হয়েছিল ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’ সিনেমার একটি গানে। অথচ দেখুন আপনার হয়ত সেটা চোখেও পড়েনি।

চাইলে এইসব পোশাক সেলেব্রিটিরা নিজের কাছেও রাখতে পারেন। যদিও এই উদাহরণ খুব একটা দেখা যায়না। তবে শোনা যায়, ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’তে নয়নার চশমাটি দীপিকা নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন। অনেকেই বলে, ঋষি কাপুরও স্মৃতি হিসেবে অনেক জিনিস নিজের কাছে রাখতেন।

আবার অনেক সময় প্রোডাকশন হাউস থেকে ভাড়াও নেয়া হয়। শুটিং শেষে সেসব পোশাক ফিরিয়ে নিয়ে যায় তারা। কিছু কিছু সময় পোশাকের ডিজাইন বদলে নতুন পোশাক বানিয়ে নেন ডিজাইনাররা।

এ তো গেল সিনেমার কস্টিউমের কথা। এবার বলব সেলেবদের ব্যক্তিগত পোশাকের কথায়। বিভিন্ন ইভেন্ট অনুষ্ঠানে অদ্ভুত সুন্দর সব পোশাক, জুতো পরে নজর কাড়েন তারা। আবার কারও হাতে দেখা যায় অদ্ভুত অদ্ভুত সব হ্যান্ডব্যাগ, যার আদতে কোনও কাজের নয়। অথচ এর একটার দামেই কিন্তু আপনার একটা ঝা চকচকে বাড়ি হয়ে যেতে পারে।

কিন্তু এই পোশাকগুলি তাদের একবারের বেশি দুবার পরতে দেখা যায়না। ভাবছেন, এগুলো তাদের ওয়ার্ডরোবে জমা হয়ে থাকে? উহঃ, একদমই তা নয়। আসলে এই জিনিসগুলি চড়া দামে ভাড়া নেন তারা। এতে ডিজাইনারের বিজ্ঞাপন দেয়াও হয়ে যায় আবার সেলিব্রেটিরাও লাইমলাইটে চলে আসেন। অর্থাৎ এক ঢিলে দুই পাখি।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্র্যান্ড পলিসির উপরেও ডিপেন্ড করে। যেমন গুচি, লুই ভিতোঁর মত বড় বড় ব্র্যান্ড অনেক সময় সেলেবদের তাদের প্রোডাক্ট গিফট করে থাকে। এটাও কিন্তু তাদের ব্র্যান্ডিংয়ের একটা কৌশল। অনেক সময় পরে ফেরতও নেয়া হয় সেসব।

 

আপনিও যদি ভাবেন, সেলিব্রেটিদের মত নিত্যনতুন সাজে সাজবেন এবং প্রচুর জামা কাপড় কিনবেন তাহলে সাবধান। যাদের দেখে এটা করছেন তারা কিন্তু নিজেরাও সমস্ত পোশাক কেনেননা। এককথায় তারা তাদের ব্যবসা করছে। তাই এই ফাঁদে পা দিলে আপনার কিন্তু টাকার শ্রাদ্ধ হতে পারে। 

কেএস//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন পোশাক