বাংলাদেশ

এনজিও মার্কা চেহারা দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা সম্ভব নয় : নুরুল হক নুর

বায়ান্ন প্রতিবেদন

ছবি-সংগৃহীত

দুই বছরের জন্য একটা জাতীয় ঐক্যমতের সরকার প্রয়োজন, যারা রাষ্ট্রের কাঠামোগত পরিবর্তন এনে একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলবে উল্লেখ করে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেছেন, ‘এই সরকার একটি অরাজনৈতিক ও বিপ্লবী সরকার। রাষ্ট্র পরিচালনা একটি রাজনীতি। অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের দিয়ে পরিপূর্ণভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা সম্ভব নয়। এনজিও মার্কা চেহারা দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা সম্ভব নয়। তাই অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের পাশাপাশি অন্তর্বতীর্কালীন সরকার তাদের পরিধি বাড়িয়ে বিভিন্ন দল থেকে প্রতিনিধি নিয়ে একটি ইনক্লুসিভ সরকার গঠন করা উচিত। অন্যথায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব থাকলে আমরা দুই বছর বললেও এই সরকারের ছয় মাস টিকে থাকা মুশকিল হবে।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর এফডিসিতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও ছাত্র রাজনীতি নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ

নুরুল হক নুর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিবাদী সরকারের সহযোগিতাকারী রাজনৈতিক দলগুলোকে আইন করে দশ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে। যাতে এটি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। পতিত সরকারের আমলে ছাত্রলীগ যে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত। সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচনে গোয়েন্দা সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কারসাজির মাধ্যমে নির্বাচিত ১১ জনের মধ্যে ভিপি হিসেবে আমিসহ মাত্র দুজনকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে। ভোট গণনায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য সে সময় ভোররাতে ভোটের ফল ঘোষণা করা হয়

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বিগত আওয়ামী সরকারের ছাত্র সংগঠন গত ১৫ বছরে শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতির নামে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছিল তা ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। এখন ছাত্র রাজনীতির কথা শুনলেই ভয় হয়। ছাত্রলীগের বিগত সময়ে নানা কর্মকাণ্ড আমাদের শঙ্কিত করে তোলে। ছাত্র রাজনীতির কথা ভাবতেই মনে হয় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণসহ সব ধরনের অপকর্ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব নিয়োগের ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের দেওয়া তালিকা থেকে নিয়োগ দিতে হতো। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব উন্নয়ন কাজে পার্সেন্টেজ নিত তারা। ঠিকাদারি কাজ কারা পাবে প্রশাসনকে সে নির্দেশনাও ছাত্রলীগ দিত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র রাজনীতির মুখোশের আড়ালে ক্ষমতা, সম্পদ, টাকা-পয়সা, তদবির বাণিজ্যই বড় হয়ে দাঁড়িয়েছিল সে সময়ের ছাত্র রাজনীতিতে

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘ছাত্র রাজনীতি শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের অন্তরায়’ শীর্ষক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, জোসিন্তা জিনিয়া, সাংবাদিক সৈয়দ আব্দুল মুহিত, সাংবাদিক শারমিন নাহার নীরা ও সাংবাদিক এবং প্রাক্তন বিতার্কিক জাফর ইকবাল। প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়

 এনএস/