ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে রাজধানীর বাড্ডায় তাসলিমা বেগম রেনুকে হত্যার ঘটনায় করা মামলার রায় পেছালেন আদালত। আগামী ৯ অক্টোবর এ রায় ঘোষণা করা হবে।
আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এ মামলার রায় হওয়ার কথা থাকলেও ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ মোরশেদ আলমের আদালত নতুন তারিখ ঠিক করেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সকল আসামির উপস্থিতিতে আজ মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল। তবে মামলার প্রধান আসামি হৃদয় মোল্লা হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
২০১৯ সালের ২০ জুলাই সকালে উত্তর-পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রেনু তার চার বছরের মেয়েকে ভর্তি করানোর বিষয়ে খোঁজ নিতে যান। সেখানে উপস্থিত কয়েকজন নারী তাকে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহ করেন। এই গুজব দ্রুত বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশ থেকে বিভিন্ন বয়সী কয়েক শ নারী-পুরুষ স্কুল প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়ে। তাদের কবল থেকে রক্ষা করতে রেনুকে স্কুলের দোতলায় প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নিয়ে রাখা হয়।
কিন্তু কিছু উচ্ছৃঙ্খল মানুষ কলাপসিবল গেট ভেঙে দোতলায় প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে তাকে টেনেহিঁচড়ে নিচে নামিয়ে এনে কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে, পেটায় লাঠি দিয়েও। এভাবে আধা ঘণ্টা অমানবিক নির্যাতনের পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন রেনু। এ ঘটনায় রেনুর ভাগ্নে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৫০০ জনকে আসামি করা হয়।
২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল হক। এদের মধ্যে জাফর ও ওয়াসিম অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দোষীপত্র দেওয়া হয়। তাদের বিচার শিশু আদালতে হবে।
২০২১ সালের ১ এপ্রিল ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার ৬ষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফাতেমা ইমরুজ কনিকা।
আসামিরা হলেন- ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লা, রিয়া বেগম ময়না, আবুল কালাম আজাদ, কামাল হোসেন, মো. শাহিন, বাচ্চু মিয়া, মো. বাপ্পি ওরফে শহিদুল ইসলাম, মুরাদ মিয়া, সোহেল রানা, আসাদুল ইসলাম, বেল্লাল মোল্লা, মো. রাজু ওরফে রুম্মান হোসেন ও মহিউদ্দিন।
মামলাটিতে আদালত চার্জশিটভুক্ত ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন। এরপর আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন ও রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের তারিখ আজ ঠিক করা হয়েছিলো।
জেএইচ