এসএসসি পরীক্ষার্থী রাকিবের ওপর সশস্ত্র হামলায় জড়িত কিশোর গ্যাং লিডার রমজান ও আল আমিনসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৪)।
আজ শুক্রবার (৭ অক্টোবর) সকালে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে অধিনায়ক ডিআইজি মোজ্জামেল হক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, ঢাকার আশুলিয়া, যশোর ও ঝালকাঠিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অন্য আসামিরা হলেন ইসমাইল হোসেন ওরফে পপকন (১৮), বিজয় (১৭) ও মো. ইয়াসিন আরাফাত ওরফে সাইমন (১৭)।
র্যাব-৪ জানায়, রাজধানীর পল্লবী এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের সিনিয়র গ্রুপের সদস্য হলেন ভিকটিম রাকিব। আর আসামিরা হলেন জুনিয়র গ্রুপের সদস্য। সম্প্রতি সালাম না দেয়ায় সিনিয়র গ্রুপের সদস্যরা জুনিয়র গ্রুপের সদস্যদের মারপিট করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জুনিয়র গ্রুপের সদস্যরা সিনিয়র গ্রুপের সদস্য রাকিবের ওপর হামলা করে তাকে গুরুতর আহত করে। আহত রাকিব ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউ বিভাগে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।
মোজ্জামেল হক বলেন, গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পল্লবীর সি-ব্লকে ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী রাকিবের (১৬) ওপর এলাকার চিহ্নিত কিশোর গ্যাং জুনিয়র গ্রুপের প্রধান রমজান ও আল-আমিনসহ অন্যান্য সহযোগীরা হামলা করে। হামলাকারীরা পেছন থেকে ভিকটিমের পিঠে ছোরা দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে মোবাইল ও মানিব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। এ হামলায় রাকিবের অবস্থা সংকটাপন্ন হলে এলাকাবাসী ও পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
মোজ্জামেল হক আরো বলেন, হামলায় আহত হওয়ার আগে রাকিব ৫টি পরীক্ষা দিয়েছিল এবং ৬ষ্ঠ পরীক্ষার দিন হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে দিতে এলে পরীক্ষা চলাকালে সম্পূর্ণ অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পরীক্ষার হল থেকে পুনরায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সে আর বাকি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। এ হামলায় বর্তমানে ভিকটিমের মেরুদন্ড ক্ষতিগ্রস্তসহ শরীরের নিচের অংশ পুরোপুরি অবশ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা ও ভিকটিম মিরপুর-১২ এলাকার বাসিন্দা। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং মাদকের অপব্যবহারসহ গ্যাং কালচারের প্রবণতা আছে। সেখানে সিনিয়র গ্রুপ জুনিয়র গ্রুপ নামে দুটি পৃথক কিশোর গ্যাং রয়েছে। যারা এলাকায় ইভটিজিং, ছোটখাট ছিনতাইসহ মাদক সেবনে লিপ্ত থাকে।
রাকিবের বাবা আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর পল্লবী থানায় রমজান, আল আমিন, বিজয়, ছোট রমজান, পপকন এবং হাসিবসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার পর এ বিষয়ে ছায়াতদন্ত শুরু করে র্যাব-৪। এরই ধারাবাহিকতায় হামলার সঙ্গে জড়িত জুনিয়র গ্রুপের লিডারসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা রাকিবকে মারধর এবং ছুরিকাঘাতের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তারদের বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও তিনি জানান।