চার দিনের সরকারি সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন সরকারের একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল। বাংলাদেশে টেকসই অর্থনীতি, স্থিতিশীলতা, প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থবহ ও মানসম্পন্ন চাকরির ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে তারা ঢাকা সফর করছেন।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শ্রমবিষয়ক ব্যুরোর আন্তর্জাতিক শ্রমবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ক্যালি ফে রদ্রিগেইজের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় পৌঁছায়। তার সঙ্গে রয়েছেন মার্কিন সরকারের শ্রম বিভাগের আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি অর্থনীতিবিদ থিয়া লি।
মার্কিন প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় পৌঁছেই শ্রমিকের কাজের পরিবেশ ও অন্যান্য বিষয়ে শ্রমিক সংগঠন সলিডারিটি সেন্টারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। প্রতিনিধি দলটি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা বাংলাদেশ অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। এছাড়া, বাংলাদেশের সরকারি, বেসরকারি খাত ও এখানে অবস্থানরত আমেরিকান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে প্রতিনিধি দলটি।
মার্কিন প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফর কেন গুরুত্বপূর্ণ?
সফরকালে মার্কিন প্রতিনিধি দলটি অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকর্তা, পোশাক শিল্পের মালিকপক্ষ ও শ্রমিক ইউনিয়নের অংশীজনের সঙ্গে দেখা করবে। তৈরি পোশাক খাতে বিনিয়োগ করা মার্কিন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও বৈশ্বিক শ্রম বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতি, গণতন্ত্র ও শ্রমিকদের কীভাবে সর্বোত্তমভাবে সহায়তা করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করবেন তারা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলছে, মার্কিন প্রতিনিধিদলের সফরে শ্রমিক সংগঠনের স্বাধীনতাসহ বাংলাদেশে বিদ্যমান শ্রম আইনের সংস্কার নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা বেশি। বিশেষ করে, ঢাকার তৈরি পোশাক খাতে দীর্ঘদিন থেকে চলমান অস্থিরতায় বন্ধে জোর দেবে ওয়াশিংটন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নর্থ আমেরিকা উইংয়ের একটি সূত্র জানায়, মার্কিন রাজনীতিতে শ্রমিকবান্ধব হিসেবে পরিচিত ডেমোক্র্যাট দল শুধুমাত্র নিজ দেশেই নয়, ক্ষমতায় থাকলে বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার থাকে। ২০২০ সালে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও শ্রম অধিকারকে ভিত্তি হিসেবে ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে, মার্কিন রাজনীতিতে রিপাবলিকানদের মালিকবান্ধব সরকার হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়। এ দলটিই মালিকদের হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে শ্রম-সংগঠনবিরোধী আইন প্রণয়ন করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার আগে এটি হয়তো বাইডেন প্রশাসনের পাঠানো প্রতিনিধি দলের শেষ ঢাকা সফর। বিদ্যমান বাস্তবতায় বাইডেন প্রশাসনের সময় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের শ্রম বিষয়ে যে পরিমাণ সোচ্চার ছিল, ট্রাম্প সরকার গঠনের পর এ বিষয়ে অতটা নজর হয়তো নাও থাকতে পারে। তাই বাংলাদেশে শ্রম অধিকার নিশ্চিতে এবং শ্রমিকদের কীভাবে সর্বোত্তমভাবে সহায়তা করা যায় তার উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার, শ্রমিক নেতা, তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চায় বাইডেন প্রশাসনের এই প্রতিনিধি দল।
জেডএস/এমআর//
