আন্তর্জাতিক

আসাদ সরকারের পতনে যা বললেন বাইডেনসহ বিশ্বনেতারা

বায়ান্ন আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বাশার আল আসাদ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ছবি: সংগৃহীত

দামেস্ক থেকে পালিয়ে যাওয়া সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এখন মস্কোতে অবস্থান করছেন।  আসাদ ও তার পরিবার সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আসাদ সরকারের পতনে উল্লাস প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি আসাদের পতনের মুহুর্তকে ঐতিহাসিক সুযোগ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়া, ইরান কিংবা হিজবুল্লাহ কেউ তার সরকারকে রক্ষা করতে পারেনি। আসাদ চলে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার সব গোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করবে বলেও জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাশার আল-আসাদকে জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত। সিরিয়ার এই রাজনৈতিক উত্থান সিরীয়দের জন্য দেশ পুনর্গঠনের একটি ঐতিহাসিক সুযোগ। ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য একটি মৌলিক কাজ ছিল সরকারের (আসাদের) পতন।’

বাইডেন আরও বলেন, ‘বিদ্রোহী বাহিনীর তোপের মুখে সিরিয়ায় অর্ধ শতাব্দীর বেশি সময় ধরে আসাদ ও তার পিতার নৃশংস কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান হয়েছে। এই স্বৈরশাসক দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আমরা নিশ্চিত নই যে তিনি কোথায় আছেন, যদিও তিনি মস্কোতে আছেন বলে জানা যাচ্ছে।’

সিরিয়ার সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর উত্থানের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক থাকবে  উল্লেখ করে জো বাইডেন আরও বলেরন, আমরা স্পষ্ট করতে চাই যে, আইএসআইএস (ইসলামিক স্টেট গ্রুপ) এই পরিস্থিতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবে। তবে আমরা এটি হতে দেব না।

অন্যদিকে, আসাদ সরকারের পতনের জন্য তারা নিজেরাই দায়ি বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী  বলেন, ‘আসাদ সরকার নিজেই তাদের পতনের জন্য দায়ী।দেশে গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক প্রক্রিয়া না থাকা এবং রাশিয়া ও ইরানের সমর্থনের ওপর নির্ভর করাটাই তার পতনকে অবশ্যম্ভাবী করে তুলেছিলো। ’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আসাদ সরকারের পতন মানে হলো প্রেসিডেন্ট পুতিনকে এখন ইউক্রেনের সঙ্গে দ্রুত যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়া উচিত।

সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি আছে। পেন্টাগনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, তারা ইসলামিক স্টেট গ্রুপের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখবেন।

আসাদ সরকারের পতনে বিশ্ব নেতারা যা বললেন

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পতনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, একটি বর্বর রাষ্ট্রের পতন হয়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেছেন, সিরিয়ার জনগণ মারাত্মক দুর্ভোগ সহ্য করেছে এবং আসাদ সরকারের অবসান একটি দারুণ খবর।

সিরিয়ার বর্তমান ঘটনাপ্রবাহে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটির ঐক্য সুরক্ষার আহবান জানিয়েছেন।

তুরেস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেছেন, তারা এখন নিজেদের দেশে ফিরতে পারবে।তুরস্কে প্রায় ৩০ লাখ সিরিয়ান শরণার্থী অবস্থান করছে।

আসাদ সরকারের  ঘনিষ্ট মিত্র হিসেবে পরিচিত ইরান  বলেছে, সিরিয়ার মানুষকেই তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে হবে কোন ধরনের ধ্বংসাত্মক হস্তক্ষেপ বা বাইরে থেকে কিছু চাপিয়ে দেওয়া ছাড়াই। আসিাদ সরকারের  পতনে ইরান লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে সরাসরি স্থলপথে যোগাযোগের সুযোগ হারিয়েছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগাছি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, বিদ্রোহীরা যখন দামেস্কের দিকে যাচ্ছিলো তখন ইরান কোনো হস্তক্ষেপের আহবান পায়নি। আমাদের কাছ থেকে সহায়তা চাওয়া হয়নি। এটা মূলত সিরিয়ান আর্মির দায়িত্ব। আমরা নিজেরা একে আমাদের দায়িত্ব মনে করিনি।

আরব আমিরাতের একজন সিনিয়র কূটনীতিক আনওয়ার গারগাশ সিরিয়ার সব গোষ্ঠী এখন একযোগে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।

সিরিয়া বিষয়ক জাতিসংঘের দূত গেইর পেডারসন একটি স্থিতিশীল ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।

 

এদিকে, সিরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য আজ সোমবারই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভা ডাকার আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া।

এমআর//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন আসাদ | সিরিয়া | বাইডেন