আন্তর্জাতিক

নববর্ষ উদযাপনের মধ্যেই সন্ত্রাসী হামলায় কেঁপে উঠলো যুক্তরাষ্ট্র, নিহত ১৫

বায়ান্ন আন্তর্জাতিক ডেস্ক

এই হামলার জন্য সন্দেহের তীর জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটসের দিকে ছবি: সংগৃহীত

নতুন বছর ২০২৫-কে বরণ করে নেওয়ার উৎসবে সবাই যখন আনন্দে ব্যস্ত ঠিক সেই সময় এক ভয়াবহ `সন্ত্রাসী হামলায় কেঁপে উঠল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিনস। স্থানীয় সময় বুধবার নববর্ষ উদযাপনের সময় আচমকা ভিড়ের মধ্যেই প্রবল গতিতে গাড়ি চালিয়ে বহু মানুষকে পিষে দেয় ঘাতক। পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়েন ওই ঘাতক। এতে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৩৫ জন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন  প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বোরবন ও ক্যানাল স্ট্রিটের ব্যস্ত এলাকায় জড়ো হয়েছিল হাজারো মানুষ। রঙ্নি আতশবাজি আর উদ্দাম নৃত্যে যখন নববর্ষ উদযাপন তুঙ্গে, তখনই সন্দেহভাজন হামলাকারী একটি ট্রাক চালিয়ে জনতার ভিড়ে ঢুকে পড়ে। ঘাতক ট্রাকটির ড্রাইভার  জনতার ওপর ট্রাক উঠিয়ে দিয়েই থেমে যাননি। ট্রাক থেকে নেমেই একটি স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে এলোপাথারি গুলি চালায়। মুহূর্তেই নববর্ষের আনন্দ পরিণত হয় এক করুণ বিষাদে।

ট্রাকচাপা ও ঘাতকের গুলিতে ঘটনাস্থলেই ১০ জন ও পরে হাসপাতালে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় ৩৫ জনের বেশি। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যেয়ে হামলাকারীকে নিরস্ত করে। পরে পুলিশের গুলিতে শামসুদ্দিন জব্বার নামে ওই ঘাতকও মারা যায়। আহতদের মধ্যে পুলিশের দুই কর্মকর্তাও রয়েছেন। বর্তমানে তাদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।  

নিউ অরলিনসের মেয়র লাটোয়া ক্যানট্রেল একে সন্ত্রাসী হামলা বলে ঘোষণা করেছেন। শহরের পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট অ্যান কার্কপ্যাট্রিক বলেছেন, এফবিআই এই ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম হিসেবে চিহ্নিত করে তদন্ত শুরু করছে। হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে একটি সন্দেহজনক বিস্ফোরক ডিভাইস  উদ্ধার হয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করে তুলেছে। হামলাকারীর উদ্দেশ্য ছিল সর্বাধিক ক্ষতি করা।

এই হামলার জন্য সন্দেহের তীর জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটসের দিকে। ঘাতক ট্রাকটিতে ইসলামিক স্টেটের পতাকা থাকায় হামলায় ইসলামিক স্টেটের সংশ্লিষ্টতা থাকার প্রমাণ আরও জোরালো হয়েছে-এমনটি মনে করছেন মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।হামলার আগে আততায়ী সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেন। ওই ভিডিওতে আততায়ীকে বলতে শোনা গেছে, তিনি আইএসের ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত।

আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই জানিয়েছে, হামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি আগে মার্কিন সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। ২০০৭ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত তিনি সেনাবাহিনীর নিয়মিত সদস্য ছিলেন। ২০১৫ থেকে ২০২০ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য হিসাবে কাজ করেছিলেন তিনি। 

এফবিআই মনে করছে, এই হামলার নেপথ্যে শামসুদ্দিন জব্বার একা  নন, আরও অনেকে জড়িত। তাই জব্বরের সঙ্গীদের ধরার চেষ্টা চলছে। এই নৃশংস ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এটি একটি ভয়ংকর সন্ত্রাসী হামলা। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য ফেডারেল সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাইডেন।

এমআর//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন সন্ত্রাসী হামলা | নববর্ষ