আকর্ষণীয় ফিগার আর যৌবনের চাকচিক্য আজীবন ধরে রাখতে চান এক নারী।আর একারণেই নিজের ছেলে সন্তানের রক্ত চান তিনি।
ওই নারীর ধারণা, তার ২৩ বছরের ছেলের রক্ত শরীরে গেলে তাঁর কোষগুলিকে সজীব রাখতে সাহায্য করবে। ফলে বয়সের ছাপ এড়ানো সম্ভব।
যৌবনের লাবণ্য ধরে রাখতে এর আগেও নানা প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহার করেছেন তিনি। আর ওইগুলো কিনতেই প্রায় ১ লাখ মার্কিন ডলার খরচ করে ফেলেছেন তিনি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। একারণে আর প্রসাধনী সামগ্র্রী নয়, এবার ছেলের রক্তই চান ওই নারী।
বাবা-মা বা অন্য কাউকে রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচানোর ঘটনা খুবই সাধারণ ব্যাপার। সরকার থেকেও বারবার রক্তদানে উৎসাহ দেওয়া হয়। তবে ত্বক থেকে বয়সের ছাপ কমাতে ছেলের রক্ত নেবেন মা। বিশাল এই পৃথিবীতে কত আজব ঘটনাই না ঘটছে।
অদ্ভুত হলেও সম্প্রতি এমনই ঘটনার কথা সামনে এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের স্বঘোষিত 'মানব বার্বি' মার্সেলা ইগলেসিয়াস এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছেন।
বর্তমানে ওই নারীর বয়স ৪৭ বছর। এই বয়সী নারীর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার ছাপ যে চোখে-মুখে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। তবে প্রকৃতির এই নিয়মটি কোনোভাবেই মানতে নারাজ মার্সেলা। সুন্দরী এই নারী বয়সের ছাপ চেহারায় দেখতে চান না।
মার্সেলা নিজেকে ‘বার্বি পুতুলের’ সঙ্গে তুলনা করতে ভালবাসেন। তাই ‘হিউম্যান বার্বি’ বলে দাবি করা এই নারী ঘোষণা দিয়েছেন, ২৩ বছরের ছেলে রদ্রিগোর শরীর থেকে তিনি রক্ত গ্রহণ করবেন!
কারণ, তাতেই নাকি তাঁর যৌবন অক্ষুণ থাকবে! ফিগার সচেতন এই নারীর দাবি, রদ্রিও নাকি রক্ত দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন।
মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক পোস্ট-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্সেলা বলেন, 'আপনার শরীরে তরুণ কোষের জোগান অব্যাহত রাখতে এই ধরনের রক্ত সঞ্চালন এক অত্যন্ত কার্যকরী এবং অত্যাধুনিক বিউটি ট্রিটমেন্ট। বিশেষ করে সেই রক্ত যদি আপনার নিজের সন্তানের শরীর থেকে নেওয়া হয়।'
নিউইয়র্ক পোস্টের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্সেলা নিজের সৌন্দর্যে এতটাই মুগ্ধ যে তিনি নিজেই নিজেকে 'জীবন্ত বার্বি'র উপাধি দিয়ে বসে আছেন।
তাঁর দাবি, নিজের যৌবন ধরে রাখতে এরইমধ্যে 'স্টেম সেল থেরাপি' করিয়েছেন।তাতে কাজ হয়নি। তাই তিনি এই নয়া রক্ত দেওয়া-নেওয়ার থেরাপি সম্পর্কে জানতে পারেন।
মার্সেলার আরও দাবি, 'এইভাবে রক্ত সঞ্চালন করা হলে নিজের শরীরে টাটকা লোহিত রক্তকণিকা প্রবেশ করবে। তার মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন শরীরে ঢুকবে। পাশাপাশি প্রোটিন সমৃদ্ধ প্লাজমা রক্তপাত বন্ধ করতে এবং শরীরকে সারিয়ে তুলতে সাহায্য করবে'।
তবে তিনি স্বীকার করেছেন, এ ধরণের বিউটি ট্রিটমেন্ট কারো বয়সের ছাপ দূর করতে পারে কিনা, সেটা প্রমাণিত হয়নি।
তবে মার্সেলের এই স্বপ্ন পূরণ সাও হতে পারে। কারণ এই বিষয়টি মোটেও ভালো নজরে দেখছে না স্থানীয় প্রশাসন।২০১৯ সালেই 'অল্পবয়সী দাতা'দের শরীর থেকে বেশি বয়সী গ্রহিতার শরীরে প্লাজমা ইনফিউশন নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে 'ফুড অ্য়ান্ড ড্রাগ অ্য়াডমিনিস্ট্রেশন' (এফডিএ)।
তাদের স্পষ্ট কথা, এর ফলে বয়সবৃদ্ধি, স্মৃতিভ্রম ডিমেনশিয়া, পারকিনসন্স ডিসিজ, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস, অ্য়ালঝাইমার মতো গুরুতর অসুখেও আক্রান্ত পারেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।'
মার্সেলা অবশ্য এসবে পাত্তা দিতে নারাজ। যেকোনো ভাবে তার যৌবন ধরে রাখাই মুল উদ্দেশ্য।
এজন্য এরইমধ্যে তিনি প্রায় এখ লাখ মার্কিন ডলার খরচ করে ফেলেছেন, শুধুমাত্র বিভিন্ন ধরনের বিউটি ট্রিটমেন্ট করানোর জন্য! তবে আর নয়, এবার তিনি ছেলের শরীর থেকে রক্ত চান!
পশ্চিমা দেশগুলোর কল্পকাহিনীতে ড্রাকুলা বা ভ্যাম্পায়ার নামক এক পিশাচের সঙ্গে অনেকেই পরিচিত। বিভিন্ন ড্রামা ও চলচ্চিত্রে দেখানো পিশাচেরা নাকি বেঁচে থাকতে এবং চির যৌবন ধরে রাখতে মানুষের রক্ত পান করত!
মার্কিন নারী মার্সেলা যদিও সরাসরি ছেলের রক্ত পান করবেন না, বিকল্প উপায়ে তা শরীরে গ্রহণ করবেন!
এমআর//