মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা নিয়ে গত সপ্তাহে প্রকাশিত জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) একটি ভুল প্রতিবেদনের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে ওই প্রতিবেদনটি কিসের ভিত্তিতে করা হয়েছে— তারও ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইসকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে বাংলাদেশের অসন্তোষের কথা জানানো হয়।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, এই প্রতিবেদন নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগ জানানোর জন্য জাতিসংঘ আবাসিক প্রতিনিধিকে ডাকা হয়েছিলো। অবিলম্বে এই প্রতিবেদন সঠিকভাবে প্রকাশ করার জন্য তাকে বলা হয়েছে।
তিনি জানান, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত তিন বছরে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে কোনও মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। কিন্তু জাতিসংঘ বাংলাদেশ অফিস সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে যে, শুধুমাত্র গত অক্টোবরেই প্রায় ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
সরকারের এই কর্মকর্তা জানান, জাতিসংঘের এক দেশের তথ্যের সঙ্গে অন্য দেশের প্রতিবেদনের কোনও মিল নেই। তাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা আছে বলে মনে হয়।
গত ৭ জানুয়ারি জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার মিয়ানমার অফিস একটি প্রতিবেদনে জানায় যে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি (অং সান সুকির সরকারকে হটিয়ে সামরিক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে) থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে ৭১ হাজার ৩০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে দেশত্যাগ করেছে।
কিন্তু তারা সবাই ভারতের মনিপুর ও মিজোরাম রাজ্যে প্রবেশ করেছে। অর্থাৎ জতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত তিন বছরে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে কেউ প্রবেশ করেনি।
আবার একই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে থাইল্যান্ডে যারা অবস্থান করছে, তারা অস্থায়ীভাবে (টেমপোরারি শেল্টার ফর ডিসপ্লেসড পিপল ফ্রম মিয়ানমার) সেখানে অবস্থান করছে। মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে যারা অবস্থান করছে, প্রতিবেদনে তাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে— তারা উদ্বাস্তু এবং পরিকল্পিতভাবে (রিফিউজি, প্ল্যানড সেটেলমেন্ট) বাংলাদেশে অবস্থান করছে।
আই/এ