দীর্ঘ ১৬ বছর কারাভোগের পর বিস্ফোরক মামলায় জামিন পাওয়া বিডিআর সদস্যরা মুক্তি পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ৪১ জন, কাশিমপুর-১ থেকে ২৬ জন, কাশিমপুর-২ থেকে ৮৯ জন এবং কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে ১২ জনসহ মোট ১৬৮ জনকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, কারা কর্তৃপক্ষ ১৬৮ জনের তালিকা হাতে পাওয়ার পরই তাদের মুক্তি দেয়া হয়।
এর আগে গেলো ২১ জানুয়ারি ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া জামিনপ্রাপ্ত ১৭৮ জন আসামির নাম প্রকাশ করেন। এর মধ্যে ১৬৮ জনের তালিকা কারা কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছায়।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে আছে।
হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচারকাজ শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। এতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন এবং ২৫৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্ট ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে, ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ২২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি ২৮৩ জনকে খালাস দেয়া হয়। তবে রায় ঘোষণার আগে ৫৪ জন আসামি মারা যান। হত্যা মামলার রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ ৮৩ জন আসামির খালাস ও সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে। এসব আবেদন এখন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
এদিকে, বিস্ফোরক মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয় ২০১০ সালে। তবে হত্যা মামলার সাক্ষ্য উপস্থাপনের কারণে বিস্ফোরক মামলার বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়।
বিদ্রোহের ঘটনায় নতুন করে তদন্ত শুরুর দাবি উঠলে, শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে ১৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ২৪ ডিসেম্বর পুনঃতদন্তের জন্য আ ল ম ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করে, যা ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় পেয়েছে।
এসি//