সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত ৩৫৩৪ জনের নিয়োগ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আদালত। দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজসমূহের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর এবং ফিজিক্যাল এডুকেশন ইন্সট্রাক্টর পদে এ ৩৫৩৪ জন নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার দ্বৈত বেঞ্চ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
আইনজীবী ব্যারিস্টার এ জেড এম নুরুল আমীন জানান, এ নিয়োগ পরীক্ষায় ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস’ হয়েছে দাবি করে গত বছর কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
‘ফাঁস প্রশ্নের টাকায় নিজ পকেটের উত্তর মেলান আবেদ আলী, প্রশ্নফাঁস চক্রের ১১৫ অ্যাকাউন্টে ১২৫ কোটি টাকা লেনদেন’ শীর্ষক একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাকাউন্টটিতে সবচেয়ে বেশি টাকা জমা হয়েছে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে। ওই বছরের ১৮ মার্চ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ইনস্ট্রাক্টর ও জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার পরদিন ১৯ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত মাত্র পাঁচ দিনে অ্যাকাউন্টটিতে জমা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। এরপর ২৮, ২৯ ও ৩০ মার্চ যথাক্রমে ২০ লাখ, ১৭ লাখ ও ১৯ লাখ করে চেকের মাধ্যমে মোট ৫৬ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়।
এরপর গত বছরের ২৬ নভেম্বর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। মনোনীতদেরকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে ১০ম গ্রেডে নিয়োগে সাময়িকভাবে সুপারিশ করা হয়েছে।
এরপর ২৩ জানুয়ারি তিন হাজার ৫৩৪ জনকে যোগদানের জন্য পৃথক প্রজ্ঞাপন দেয়া হয়।
এ আইনজীবী জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর একই রকমভাবে রেলওয়ের নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু এখানে সেটা করা হয়নি। এছাড়া সিআইডিতে অভিযোগ এখনো তদন্তনাধীন। এরপরও ৩৫৩৪ জনকে যোগদানের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এর প্রেক্ষিতে এ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়া ১৮ জন প্রার্থী হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট রিটের শুনানি নিয়ে প্রজ্ঞাপনগুলো ৩ মাসের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করেন।
প্রসঙ্গত, আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার এ জেড এম নুরুল আমীন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম মাকসুদ উল্লাহ, রোকনুজ্জামান সুজা ও শফিকুল ইসলাম।
