আর্থিক সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে ভারতে গিয়ে কিডনি বিক্রি করছে মিয়ানমারের দরিদ্র গ্রামবাসী। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে বিবিসি নিউজ।
২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতির দিকে যায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে উঠে। অনেক ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে পড়ে অনেক গ্রামবাসী। এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে তারা অবৈধ পথে ভারতে পাড়ি জমিয়ে কিডনি বিক্রি করছে।
মিয়ানমারের কৃষিকর্মী জেয়া জানান, তিনি একটি বাড়ি কেনা ও ঋণ পরিশোধের জন্য কিডনি বিক্রি করেছেন। ইয়াঙ্গুন থেকে কয়েক ঘণ্টার দূরত্বে তার গ্রামে এমন আরও আটজনের সন্ধান পাওয়া গেছে। যারা একই কারণে ভারতে গেছেন।
মিয়ানমার ও ভারতে মানব অঙ্গ কেনাবেচা সম্পূর্ণ অবৈধ। দালালরা জাল কাগজপত্র তৈরি করে কিডনী কেনা-বেচা করছে। জেয়ার ভাষ্যমতে, এক দালাল প্রথমে তার মেডিকেল পরীক্ষা করায়। পরে একজন গ্রহীতার সন্ধান দেয়। ভারতে অস্ত্রোপচারের জন্য তাকে আত্মীয় পরিচয়ে উপস্থাপন করতে জাল কাগজপত্র তৈরি করা হয়।
ভারতে কিডনি প্রতিস্থাপন কঠিন নিয়মের আওতায় পড়ে। দাতা ও গ্রহীতা নিকটাত্মীয় না হলে, তাদের পরস্পরের সম্পর্ক ও ডোনেটের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে হয়। যদি সেটি প্রমাণ না হয় তবে অস্ত্রোপচার অনুমোদন পায় না। তবে, ভারতের পাশাপাশি পুরো এশিয়া জুড়েই অবৈধ অঙ্গ ব্যবসার শক্তিশালী চক্রটি এখনও সক্রিয় রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের তথ্যমতে, ২০১০ সালের পর থেকে সারাবিশ্বে কিডনি প্রতিস্থাপনের সংখ্যা ৫০ ভাগ বেড়েছে। প্রতি বছর আনুমানিক দেড়লাখ কিডনি প্রতিস্থাপন হচ্ছে। তবে এটি বিশ্বব্যাপী চাহিদার মাত্র ১০ ভাগ।
সম্প্রতি দারিদ্র্যের কারণে নেপাল, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, আফগানিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অবৈধ কিডনি বিক্রির প্রবণতা বাড়ছে।
এসকে//