ড. ইউনূস সরকারের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে রোহিঙ্গারা। তবে, জান—মাল, ভিটে—বাড়ী এবং নাগরিক অধিকার নিশ্চিতসহ শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের পক্ষে রোহিঙ্গারা।
শনিবার (৫ এপ্রিল) উখিয়া—টেকনাফে ৩২টি ক্যাম্পে বসবাসকারী প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার পক্ষে সেখানকার নেতারা জানিয়েছেন, যে কোন মুহুর্তে মিয়ানমারে ফিরতে প্রস্তুত তারা।
বিমসটেক সম্মেলনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে সেদেশের জান্তা সরকার। চূড়ান্ত যাচাই—বাছাইয়ের পর্যায়ে আছে আরও ৭০ হাজার রোহিঙ্গা। প্রত্যাবাসনের নতুন এই খবরে উখিয়া—টেকনাফের ৩২টি ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের মাঝে স্বস্তি দেখা দিয়েছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ড. ইউনূস সরকারের এই আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং ভূমিকারও প্রশসংসা করেছেন রোহিঙ্গা নেতারা। তারা বলেন, ড. ইউনূস বিভিন্ন দেশের সাথে যোগাযোগ করে এবং সফরের মাধ্যমে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে আন্তরিকতার সাথে কাজ করছেন।
অনুপ্রবেশের ৮ বছরের মধ্যে প্রত্যাবাসনের এই প্রক্রিয়াকে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। তারা বলেন, মাঝে কোন ধরনের বিরতি না দিয়ে একসাথে প্রত্যাবাসন করাই তবে উপযুক্ত কাজ। ঠিক কোন প্রক্রিয়ায় প্রত্যাবাসন করা হবে সেটিও স্পষ্ট করার দাবী তাদের। জান—মাল, ভিটে—বাড়ী ও নাগরিক অধিকারের নিশ্চয়তাসহ শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের পক্ষে রোহিঙ্গারা।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিচ এন্ড হিউম্যান রাইটস্ এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জুবাইর বলেন, আমাদের দেশ আরাকানে ফিরে যেতে পারলে আমরা খুব বেশী খুশি এবং এটার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি। এতদিন পর ড. ইউনূসের মতো একজন নেতা আমাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। মিয়ানমার থেকে আর কোন রোহিঙ্গা যাতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ না করে সেভাবে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত ত্রাণ, শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামস্ উজ্ দোহা বলেন, এটি রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়। হাই অফিসিয়ালে যেহেতু বিষয়টি নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে তাই আমার পক্ষে বিস্তারিত বলার কিছু নেই। কোন নির্দেশনা আসলে সেটি আমরা বাস্তবায়ন করব।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০১৮—২০ সালে ছয় ধাপে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের তালিকা দেয়। সেই তালিকা থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা নিয়ে মিয়ানমারের নতুন দৃষ্টিভঙ্গিকে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পথে বড় অগ্রগতি বলছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
তাছাড়া, আরও সাড়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গার যাচাই—বাছাইয়ের কাজ জরুরি ভিত্তিতে করবে জান্তা সরকার।
আই/এ