ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও এক চিকিৎসককে ওএসডির আদেশ প্রত্যাহারসহ ৩ দফা দাবিতে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের সেবা দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এতে হাসপাতালে আসা রোগীরা দুর্ভোগে পড়েছেন।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) কোন অবস্থান কর্মসূচি না থাকলেও বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখেছেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। ইন্টার্নি চিকিৎসক এসোসিয়েশন এর সভাপতি ডাঃ মোঃ সবুর হোসেন বায়ান্ন টিভিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, গত গত ১৪ এপ্রিল দুপুরে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশিক তার সহপাঠীদের সঙ্গে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আশিকের সহপাঠীরা চিকিৎসকের 'অবহেলার' অভিযোগ তোলেন। এরপর গত ১৬ এপ্রিল পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এ এম এস শামিম আল আজাদকে ওএসডি করা হয়।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে তিন দফা দাবিতে গেলো বৃহস্পতিবার থেকে বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখেন চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
৩ দফা দাবি হলো
১ হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ডাক্তার, নার্স, সংশ্লিষ্ট কর্মচারী, মেডিকেল শিক্ষার্থী এবং চিকিৎসাধীন রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
২ তদন্ত চলাকালীন সময়ে চিকিৎসক ডা. শামিম আ; আজাদকে ওএসডির আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে।
৩ পটুয়াখালীতে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট পুর্নাঙ্গ হাসপাতাল চালু ও প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ করতে হবে।
ইন্টার্নি চিকিৎসক এসোসিয়েশন এর সভাপতি ডাঃ মোঃ সবুর হোসেন বায়ান্ন টিভিকে কে বলেন, 'আমাদের নিরাপত্তাহীনতার কারণে হাসপাতালের সব সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতালের এক চিকিৎসককে ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করে ওএসডি করা হয়েছে। তাই আমরা এ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম’।
তিনি বলেন, ১৪ এপ্রিল এর ঘটনায় হাসপাতল ভাংচুর ঘটনার তদন্ত এবং যারা জড়িত তাদের বিচার এর আওতায় আনা উচিত। এগুলো জনগনের তথা রাষ্ট্রের সম্পদ। আমরা ইন্টার্নি শেষ করে চলে যাবো। কিন্তু পটুয়াখালী জেলার মানুষ আর কত স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত থাকবে? যেখানে রোগীর তুলনায় আসন কম , ২৫০ আসনের হাসপাতালে ৫০০-৬০০ রোগীর সেবা দিতে হচ্ছে। ১৮০ জন ডাঃ প্রয়োজন, সেখানে মাত্র ২০ জন ডাক্তার রয়েছে। সকল ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার অভাব রয়েছে। এসময় জেলাবাসীকে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে না নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি
ইন্টার্নি চিকিৎসক ডাঃ শিমুল মজুমদার জানান, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে। আন্দোলন চলমান থাকায় বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখও প্রকাশ করে তিনি বলেন, বহির্বিভাগ বন্ধ থাকলেও হাসপাতালের জরুরি সকল সেবা চালু আছে ।
আই/এ