সাম্প্রতিক রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সোমবার (১২ মে) দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিকে যৌক্তিক মনে করলেও, কোনো দলীয় স্লোগান বা জনগণের ইতিহাসবিরোধী বক্তব্যের সঙ্গে এনসিপি জড়িত নয়।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনে দলটির বিচার দাবি করা আন্দোলনে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। কিন্তু একটি বিশেষ পক্ষ এই আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে দলীয় স্লোগান ও দেশের ইতিহাসবিরোধী বক্তব্য প্রচার করে জাতীয় ঐক্য বিনির্মাণের প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
বিবৃতিতে এনসিপি স্পষ্ট করে জানায়, তাদের কোনো সদস্য এমন বিভ্রান্তিকর ও বিতর্কিত স্লোগানের সঙ্গে যুক্ত নয়। যারা এমন বক্তব্য দিয়েছে, দায়ভার তাদেরই বহন করতে হবে। এনসিপি’র দাবি, তাদের সদস্যদের বক্তব্য ও স্লোগানে ১৯৪৭, ১৯৭১ এবং ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি ছিল। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সময় একটি পক্ষ আপত্তি জানালেও আন্দোলনকারীরা তা উপেক্ষা করে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।
এনসিপি মনে করে, ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪-এর সংগ্রামকে স্বীকৃতি না দিয়ে বাংলাদেশে রাজনীতি করা অনৈতিক। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করা এবং গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে, তাদের জাতির সামনে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করা জরুরি। এতে করে জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় হবে এবং ২০২৪ সালের ‘জন-আকাঙ্ক্ষা’র বাস্তবায়ন সহজ হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে যেসব নাগরিক গণতান্ত্রিক উত্তরণে ভূমিকা রেখেছেন, তাদের এখন ‘বাংলাদেশপন্থি’ ভূমিকায় অব্যাহত থাকতে হবে। অতীতের মতভেদ ও বিভাজন দূর করে, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের পথে অগ্রসর হওয়া।
এনসিপি বিশ্বাস করে, এই ঐক্যের মাধ্যমেই কেবল মুজিববাদকে ঐতিহাসিকভাবে পরাজিত করা সম্ভব। দলের পক্ষ থেকে দেশের সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য সকল পক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণ ও দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
এসি//