আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিতেই কি থেমে গেল পাক-ভারত যুদ্ধ?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে হস্তক্ষেপ করে সম্ভাব্য পারমাণবিক সংঘাত রুখে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র—এমন চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (১৩ মে) হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি ভয়ংকর পারমাণবিক যুদ্ধ থামিয়েছি, যা লক্ষ লক্ষ প্রাণহানি ঘটাতে পারত। আমি গর্বিত যে যুক্তরাষ্ট্র এ ভূমিকা রেখেছে।’

ট্রাম্প আরও জানান, শনিবার (১০ মে) তার প্রশাসনের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তাৎক্ষণিক ও পূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তার ভাষায়, ‘এটি স্থায়ী সমাধানের পথ তৈরি করেছে।’

এসময় তিনি দাবি করেন, কেবল কূটনৈতিক চাপ নয়, বরং বাণিজ্য নিয়েও দুই দেশকে চাপে রেখেছিলেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বলেছিলাম—তোমরা যদি যুদ্ধ থামাও, তাহলে আমরা বাণিজ্য করব। না থামালে, কোনো বাণিজ্য নয়।’

তবে ভারতের কূটনৈতিক সূত্র ট্রাম্পের বক্তব্য পুরোপুরি অস্বীকার করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ‘অপারেশন সিন্ধুর’ শুরুর পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কয়েকবার কথা হয়। তবে কোথাও বাণিজ্য ইস্যু তোলা হয়নি।

এদিকে, ট্রাম্প এই মন্তব্য করেছেন ভারত ও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসার আগেই। বিষয়টি ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

ভারতের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো একে দেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছে। কংগ্রেস নেতা ভূপেশ বাঘেল প্রশ্ন তুলেছেন, ‘যদি যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব ট্রাম্প নিয়ে থাকেন, তাহলে কি এটা কূটনৈতিক ব্যর্থতা নয়?’

সিপিআই(এম) নেতা এমএ বেবি বলেন, ‘ট্রাম্প যে ভাষায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন, তা আমাদের রাষ্ট্রীয় অবস্থানকে দুর্বল করে।’

আম আদমি পার্টি (আপ) ট্রাম্পের ঘোষণাকে ভারতের সার্বভৌমত্বের ওপর ‘সরাসরি আঘাত’ বলে মন্তব্য করেছে এবং একে ‘জাতীয় অখণ্ডতার সঙ্গে আপোষ’ বলে অভিহিত করেছে।

উল্লেখ্য, ভারত শাসিত পেহেলগামে হামলার জন্য শুরু থেকেই পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে ভারত। তবে, হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে আসছে ইসলামাবাদ। তারপরেও কোনো প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ নেয় ভারত। পাল্টা ব্যবস্থা নেয় পাকিস্তানও। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি, যা টানা দুই সপ্তাহ চলার পর শেষপর্যন্ত সংঘাতে রূপ নেয়।

দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলা রীতিমতো যুদ্ধের রূপ ধারণ করতে চলেছিল। এমন অবস্থায় দীর্ঘ ৪৮ ঘণ্টার আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ভারত-পাকিস্তান।

 

 এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #ডোনাল্ড ট্রাম্প #নরেন্দ্র মোদী #শাহবাজ শরীফ