অপরাধ

অনলাইনে প্রতারণার একশ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার; তিনজন গ্রেফতার

বায়ান্ন প্রতিবেদন

একশ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোনসহ সংঘবদ্ধ অনলাইন প্রতারক চক্রের তিন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে রাজধানীর নিউমার্কেট থানা পুলিশ । গ্রেফতারকৃতদের নাম মো. আসিফুর রহমান (২০),  মো. আল আমিন (২৫) ও অনামিকা (২৪) ।শুক্রবার (১৬ মে ) সাভার ও মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। 

পুলিশ জানিয়েছে, নিউমার্কেট থানা এলাকার বাসিন্দা আফরোজা হোসেন গেল বছরের ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তার ফেসবুকে "দোয়া কবুলের অলৌকিক গল্প" নামক একটি ফেসবুক গ্রুপ দেখতে পান। ওই গ্রুপে একটি পোস্টে “তদবীর রুকাইয়া” লেখা দেখে তিনি পোস্টদাতার মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করেন। উক্ত আইডি ব্যবহারকারী অজ্ঞাতমহিলা তাকে জানায়, সে তাকিয়ার মাধ্যমে অনেক সমস্যা সমাধান পেয়েছে। উক্ত মহিলা তাকে তাকিয়া নামক ফেসবুক আইডির লিংক দিয়ে যোগাযোগ করতে বলে। আফরোজা হোসেন তার কথামতো উক্ত ফেসবুক আইডির মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করেন। তাকে উক্ত আইডি ব্যবহারকারী তাকে জানায় তিনি সব সমস্যার সমাধান করতে পারেন। এক পর্যায়ে আফরোজা হোসেন তার বাচ্চা না হওয়ার বিষয়ে জানতে চান। তখন আইডি থেকে প্রতারক তাকে জানায়,  তার কথামতো কাজ করলে সমস্যা সমাধান হবে। ১৮ জানুয়ারি সন্ধায় সেই অজ্ঞাতনামা মহিলা মেসেঞ্জারে একটি নাম্বার দেয়। ওই নাম্বারে ছয় হাজার একশত টাকা বিকাশ করতে বলে। আফরোজা সরল বিশ্বাসে উক্ত নাম্বারে টাকা পাঠান। এরপর ১৯ জানুয়ারি তারিখে উক্ত মহিলা আফরোজা বেগমের ব্যবহৃত জামা কাপড়, শ্যাম্পু, সাবান, তেল ও স্বর্ণের গহনা কুরিয়ার করে তার কাছে পাঠিয়ে দিতে বলে। এসময় আফরোজাকে জানানো হয়, এসব ঝাড়ফুঁক দিয়ে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তার কাছে ফেরত পাঠানো হবে। সেগুলো ব্যবহার করলে তার সন্তান হবে।  সব সমস্যা কেটে যাবে। আফরোজা হোসেন তার কথামতো তার ব্যবহৃত ২৫ ভরি স্বর্ণ ও ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী এস এ পরিবহনের মাধ্যমে প্রেরণ করেন। অতঃপর সে উক্ত স্বর্ণ ও মালামাল নিয়ে তাকে ম্যাসেঞ্জার হতে ব্লক করে দেয়। পরে তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারিত হয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে আফরোজা হোসেন বাদী হয়ে ডিএমপির নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা করেন।

পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুক্রবার( ১৬ মে ) রাত সোয়া তিনটার দিকে সাভারের নিজ বাসা থেকে আসামি আসিফুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার দেয়া তথ্য মতে মোহাম্মদপুরের বছিলা ফিউচার হাউজিংয়ের একটি বাসা থেকে আল আমিন ও অনামিকাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকালে আসিফুরের হেফাজত হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সীমসহ একটি মোবাইলফোন জব্দ করা হয়। অপর আসামি আল-আমিন  ও অনামিকার হেফাজত হতে ৮৫ ভরি স্বর্ণালংকার, কপারযুক্ত ২৬ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা ও  প্রতারণায় ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। 

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে গ্রেফতারকৃতরা সংঘবদ্ধ অনলাইন প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। 

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #অনলাইন প্রতারক #ফেসবুক