লাইফস্টাইল

যেকারণে আপনার সন্তান অন্যমনস্ক হতে পারে

বায়ান্ন প্রতিবেদন

ছবি: সংগৃহীত

শিশুরা সাধারণত খুবই চঞ্চল ও দুরন্ত প্রকৃতির হয়ে থাকে।  তাদের এ চঞ্চলতা যেমন বাবা-মায়ের জন্য কখনও সময় কাটানোর জন্য আনন্দের আবার কখনও বা তা অনেকটাই বিরক্তিকর হয়ে উঠতে পারে।  তবে যখন শিশুরা অমনোযোগী বা মানসিকভাবে চঞ্চল হয়ে ওঠে, তখন এটি অভিভাবকদের জন্য একটি বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।  তাদের মনোযোগ কেন এমনভাবে বিচলিত হচ্ছে? কি কারণে শিশুদের মনের অস্থিরতা বেড়ে যায়? শিশুর মানসিক চঞ্চলতা বা অন্যমনস্কতার পেছনে যে কারণগুলো কাজ করে আসুন তা জেনে নেই। 

সঠিক পুষ্টির অভাব

শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের জন্য সঠিক পুষ্টি অত্যন্ত জরুরি।  সঠিক পুষ্টির অভাব শিশুর শারীরিক অস্থিরতা বা মানসিক অস্থিরতা বাড়িয়ে দিতে পারে।  শিশুদের সঠিক পুষ্টি না পেলে তাদের মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায়, তারা খিটখিটে হয়ে পড়ে।  এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শিশুর মানসিক শান্তি বিঘ্নিত হয়।  সুতরাং, অভিভাবকদের উচিত সন্তানকে সঠিক পুষ্টি দেওয়া এবং তার পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা।

‘অ্যাটেনশন সিকার’ বা দৃষ্টি আকর্ষণের ইচ্ছা

শিশুরা খুব ছোট বয়স থেকেই অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়।  তারা চায় যে সবাই তাদের দিকে মনোযোগ দিক এবং তাদের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করুক।  যখন তারা সেই মনোযোগ পায় না, তখন তাদের মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায় এবং তারা অমনোযোগী হয়ে পড়ে।  সুতরাং, শিশুদেরকে সময় দেওয়া এবং তাদের কর্মকাণ্ডের প্রতি মনোযোগী হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  এটি তাদের মানসিক শান্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং তাদের অমনোযোগিতা কমায়।

পারিবারিক পরিবেশের প্রভাব

শিশুদের মানসিক অবস্থার ওপর পারিবারিক পরিবেশের গভীর প্রভাব পড়ে।  যদি পরিবারে অশান্তি বা সমস্যা থাকে, তাহলে শিশুরাও অস্থির হয়ে পড়ে।  বাবা-মায়ের মাঝে সম্পর্কের টানাপড়েন বা পরিবারে ঝগড়া-ঝাটি শিশুর মনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং তাদের মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায়।  তাই অভিভাবকদের উচিত পরিবারের মধ্যে শান্তি বজায় রাখা এবং সন্তানদের সামনে এমন কিছু না ঘটানো, যা তাদের আত্মবিশ্বাসকে নষ্ট করে।

শারীরিক ও মানসিক অস্থিরতা

শিশুর মানসিক চঞ্চলতা অনেক সময় তাদের শারীরিক বা মানসিক অস্থিরতার কারণে ঘটে। যখন কোনও শিশু শারীরিকভাবে অসুস্থ হয় বা মানসিকভাবে চাপের মধ্যে থাকে, তখন তার মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায়।  এ ছাড়াও কিছু শিশুর পছন্দের কাজ বা অভিজ্ঞতা পরিবর্তিত হতে থাকে এবং এতে তাদের মনোযোগের সমস্যা সৃষ্টি হয়।

শিক্ষামূলক চাপ

বর্তমান সময়ে শিশুরা অনেক বেশি শিক্ষামূলক চাপের মধ্যে থাকে।  স্কুলের পড়াশোনা, পরীক্ষা এবং অ্যাসাইনমেন্টের চাপ তাদের মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেয়।  এই চাপ থেকে তারা অমনোযোগী হয়ে পড়ে এবং তার মানসিক চঞ্চলতা বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত চাপ শিশুদের মানসিক শান্তি নষ্ট করে, যা তাদের মনোযোগে বিঘ্ন ঘটায়।

যেভাবে অভিভাবকদের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া উচিত

শিশুর মানসিক চঞ্চলতা বা অন্যমনস্কতা একেবারে অস্বাভাবিক নয়, তবে এই সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে অভিভাবকদের উচিত সতর্ক হওয়া। শিশুদের জন্য একটি সঠিক পুষ্টিকর খাদ্য, পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক প্রশান্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি তাদের জন্য সময় বের করা এবং পারিবারিক পরিবেশকে শান্ত রাখা তাদের মনোযোগ এবং আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে দেয়।

এসকে// 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #চঞ্চল ও দুরন্ত #শিশু