গাজীপুরের টঙ্গীতে শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী এক নারীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন এক দম্পতি।
রোববার (২৫ মে) বিকেলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেন সাইফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী সাদিয়া আক্তার ।
সোমবার (২৬ মে) সকালে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুরের পুলিশ সুপার আবুল কালাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আবুল কালাম জানান, নিহত রাবেয়া সাবরিন (২৮) পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি স্থানীয় একটি প্রতিবন্ধী সুরক্ষা সংস্থায় (মৈত্রী শিল্প) কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তিনি একই এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। গ্রেপ্তারকৃত সাইফুল ইসলাম (২৮) ও সাদিয়া আক্তার (১৯)।
তাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার নিন্দারাবাদ গ্রামে। তবে তারা গাজীপুরের টঙ্গীর গাজীবাড়ি পুকুরপাড় এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন।
পিবিআই সূত্রে জানা যায়, সাবরিন তার মায়ের সঙ্গে একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় থাকতেন। গত ১৯ মে সকালে তিনি বাসায় একা ছিলেন। সেদিন সকাল ৯টার দিকে পাশের এক প্রতিবেশী সাবরিনের কক্ষের দরজা বাইরে থেকে আটকানো দেখতে পান। দরজা খুলে দেখা যায়, বিছানায় হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় সাবরিনের নিথর দেহ পড়ে আছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
পরে নিহতের মা অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পিবিআই তদন্তের দায়িত্ব পেলে পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটে দম্পতি সাইফুল ও সাদিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সাইফুল অনলাইন জুয়ায় আসক্ত এবং তার বাড়িভাড়াসহ নানা আর্থিক সংকট ছিল। নিহত সাবরিন আর্থিক বোনাস পাচ্ছেন এমন খবরে তারা এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন। জবানবন্দি গ্রহণের পর রাতেই ওই দম্পতিকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।
পিবিআই আরও জানান, ১৯ মে ভোরে কৌশলে সাবরিনের বাসায় ঢুকে তাঁকে বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তারা। হত্যার পর সাবরিনের ব্যাগ থেকে মাত্র ১ হাজার ২৫০ টাকা এবং ২ কেজি চাল নিয়ে পালিয়ে যান।
এসকে//