ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু চুক্তি নিয়ে অচল অবস্থার মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে বাড়ছে উত্তেজনা। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, ইসরাইল যেকোনো সময় ইরানে হামলা চালাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরাইল বরাবরই এই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল, কিন্তু এতদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অপেক্ষা করেছিলেন। এখন সেই বাঁধ ভেঙে গেছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাড়তে থাকা সংঘাতের আশঙ্কায় নিজেদের মধ্যপ্রাচ্যস্থ কর্মীদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বাগদাদের মার্কিন দূতাবাস থেকে অতি প্রয়োজনীয় নন এমন কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বাহরাইন, কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ আরও কিছু দেশ থেকেও কর্মীদের স্বেচ্ছায় চলে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে ওয়াশিংটন।
বিবিসি একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে। তবে মার্কিন কর্তৃপক্ষ সরাসরি কোনো কারণ স্পষ্টভাবে না বললেও, ইরানের সঙ্গে পরমাণু আলোচনা থমকে যাওয়ায় অঞ্চলের উত্তাপ বাড়ার বিষয়টি অনেকেই ইঙ্গিত করছেন।
এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, গত বুধবার মার্কিন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে— ইসরাইল ইরানে সামরিক অভিযান শুরু করার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। এমন পরিস্থিতিতে ইরানও পাল্টা হামলার হুমকি দিচ্ছে। তাদের লক্ষ্য হতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন মার্কিন ঘাঁটি।
একইদিন ওয়াশিংটনের কেনেডি সেন্টারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা আমাদের নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছি কারণ অঞ্চলটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি কী রূপ নেয় তা দেখা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইরানকে কখনও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেওয়া হবে না। আমরা সেটি কোনো অবস্থাতেই মেনে নেব না।’
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথও জানান, তার কাছে বেশ কিছু তথ্য আছে, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে— ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর পথে এগোচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র চাইছে, ইরান যেন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এর বিনিময়ে তেহরানের ওপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করার প্রস্তাবও দিয়েছে ওয়াশিংটন।
তবে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যদি আমাদের ওপর সংঘাত চাপিয়ে দেওয়া হয়, তবে তাদের জানা উচিত— মধ্যপ্রাচ্যে থাকা সব মার্কিন ঘাঁটি আমাদের লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে রয়েছে। প্রয়োজন হলে আমরা সাহসের সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’