দীর্ঘ আট বছর লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার পর অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন ফোর্বসের তালিকায় দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী জেফ বেজোস।
পাত্রী মেক্সিকান-আমেরিকান পরিবারের সেই সাংবাদিক বান্ধবী লরেন সানচেজ। সাংবাদিক, উপস্থাপক, অভিনেত্রী ও একজন হেলিকপ্টার পাইলট হিসেবে পরিচিতি রয়েছে লরেনের।
ইতালির ভেনিসে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে আংটি বদল করলেন মার্কিন ধনকুবের অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস ও সাংবাদিক লরেন সানচেজ।

শুক্রবার ভেনিসের ছোট্ট দ্বীপ সান জর্জিওতে বিয়ের মূল আয়োজন সম্পন্ন হয়। এই বিয়েতে শোবিজ, রাজনীতি ও আর্থিক জগতের প্রথম সারির ২০০ থেকে ২৫০ জন তারকা ব্যক্তিত্ব অংশ নিয়েছেন।
তারকা ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন কার্ডাশিয়ান-জেনার পরিবার, বিল গেটস, কার্লি ক্লস, অপরা উইনফ্রে, হলিউড তারকা কিম কার্ডাশিয়ান,অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, গায়ক মিক জ্যাগার, ব্রিটিশ অভিনেতা অরল্যান্ডো ব্লুমসহ জনপ্রিয় তারকারা।

এছাড়া, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভাংকা ট্রাম্পও ছিলেন অতিথি তালিকায়।

জনপ্রিয় তারকাদের হোটেল থেকে ওয়াটার ট্যাক্সিতে করে অনুষ্ঠানস্থলে যেতে দেখা গেছে।
তবে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা নিরব ছিলেন। কারণ, অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে গোপনে অনুষ্ঠানটির আয়োজন সম্পন্ন হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
সন্ধ্যায় কানারেজিও এলাকার একটি মধ্যযুগীয় গির্জা মাদোনা দেল অর্তোয় জড়ো হন অতিথিরা। নৈশভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অতিথিদের স্বাগত জানানো হয়।
বিক্ষোভের মধ্যেই ভেনিসে বিয়ে হয়ে গেলো জেফ বেজোস ও লরেন সানচেজের। বিয়ের আয়োজন ঘিরে অনেক স্থানীয় বাসিন্দার মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।
তাঁদের অভিযোগ, শহরটির কর্তৃপক্ষ ধনী পর্যটকদের স্বাগত জানালেও সাধারণ মানুষের সমস্যাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।সমালোচকদের কেউ কেউ বলছেন, ভ্রমণকারীদের ভিড়ের কারণে বাড়িভাড়া বেড়ে যাচ্ছে, এতে স্থানীয় মানুষজন শহর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে।
বর্তমানে ২৩ হাজার ৯৪০ কোটি মার্কিন ডলার সম্পদের মালিক জেফ বেজোস। পুরো নাম জেফরি প্রেস্টন জেফ বেজোস।
তিনি একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা যিনি ই-কমার্সের বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন।
তার নেতৃত্বে আমাজন.কম ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এর বৃহত্তম খুচরা বিক্রেতায় পরিণত হয়।
২০১৩ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের মালিক হন।
৫৫ বছর বয়সী লরেন আর ৬১ বছর বয়সী বেজোস-দুজনের এটি ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। সমাজসেবী ম্যাকেঞ্জি স্কট তাঁর প্রথম স্ত্রী।
২০১৯ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। সানচেজেরও এটি দ্বিতীয় বিয়ে।
তাঁর সাবেক স্বামী প্যাট্রিক হোয়াইটসেল মেধাবী উদ্যোক্তাদের সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান ‘এন্ডেভার’-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান। তাঁদেরও ২০১৯ সালে বিচ্ছেদ হয়।
মার্কিন গণমাধ্যমগুলো বলছে, লরেনের জন্যই ২০১৯ সালের মাঝামাঝিতে স্ত্রী ম্যাকেঞ্জি স্কটের সঙ্গে ২৫ বছরের সংসারের ইতি টানেন জেফ বেজোস।
এই বিচ্ছেদ বিশ্বজুড়ে তুমুল আলোচিত হয়।বিবাহবিচ্ছেদের নিষ্পত্তিতে ৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পাশাপাশি অ্যামাজন স্টকের ২৫ ভাগ পেয়েছেন স্কট।
বিচ্ছেদের পরই চার সন্তানের জনক জেফ বেজোস আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেন তিনি লরেন সানচেজের সঙ্গে ডেটিং করছেন।
২০২৩ সালের ২২ মে বেজোস ও লরেনের এনগেইজমেন্ট হয়।
এর আগে, ২০০৫ সালে মার্কিন ব্যবসায়ী প্যাট্রিক হোয়াইটসেলের সঙ্গে বিয়ের পিড়িতে বসেন লরেন সানচেজ।
২০১৯ সালের এপ্রিলে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। এলা এবং ইভান নামে তুাদের দুটি সন্তান রয়েছে।

এর আগে মার্কিন ফুটবল তারকা টনি গঞ্জালেজের সাথে সম্পর্কে থাকার সময়ে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন লরেন।

নিকোও নামে ওই সন্তানের বয়স এখন ২২ বছর।
এমআর//