ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির অন্তত ৬০ জন এমপি। একইসঙ্গে গাজায় চলমান ‘জাতিগত নিধন’ বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির কাছে পাঠানো একটি খোলা চিঠিতে এসব দাবি তুলে ধরেন এমপিরা। চিঠিটি পাঠিয়েছে ‘লেবার ফ্রেন্ডস অব ফিলিস্তিন অ্যান্ড দ্য মিডল ইস্ট’ নামের একটি পার্লামেন্টারি গ্রুপ।
চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন, লেবার পার্টির মধ্যপন্থী ও বামঘরানার ৫৯ জন এমপি। এমপিরা গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহর ধ্বংসস্তূপে ত্রাণের অজুহাতে তাবু শহর গড়ে তোলার ইসরায়েলি পরিকল্পনা বন্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
ব্রিটিশ এমপিরা হুঁশিয়ারি দেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের জোরপূর্বক স্থানান্তর এবং তাদের নিজেদের ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদের শামিল হবে।
গাজার সব ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিককে রাফাহর ধ্বংসস্তূপে একটি ক্যাম্পে জোরপূর্বক স্থানান্তরের পরিকল্পনা করা হচ্ছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ঘোষণার পর আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। যেখানে তাদের বের হওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না। আমরা এটিকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে দেখছি।
যুক্তরাজ্যকে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-র তহবিল পুনরায় চালু করা, জিম্মিদের মুক্তির জন্য পদক্ষেপ নেওয়া এবং অধিকৃত পশ্চিমতীরে ইসরায়েলি বসতিতে উৎপাদিত পণ্যের ওপর বাণিজ্য অবরোধ আরোপ করা।
আমরা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দিয়ে আমাদের নিজেদের দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের নীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছি এবং এই বার্তা দিচ্ছি যে, বর্তমান পরিস্থিতি চলতে থাকবে এবং এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড মানচিত্র থেকে কার্যত মুছে ফেলা ও দখলের পথ তৈরি হবে।
নতুন লেবার সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরও যুক্তরাজ্য এখনো ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক নীতিগত পরিবর্তন আনেনি।
এদিকে গাজায় চলমান যুদ্ধ ইতোমধ্যে দশম মাসে পা দিয়েছে। এ সময়ে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বারবার বলছেন—গাজায় ব্যাপক মানবিক বিপর্যয়, অবকাঠামোগত ধ্বংস এবং যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা প্রায় ভেঙে পড়েছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
এসি//