লাইফস্টাইল

রাস্তায় হাঁসের মাংস, সুস্বাদু হলেও কতটা নিরাপদ !

লাইফস্টাইল ডেস্ক

বর্তমানে শহরের রাস্তায় বিভিন্ন ফাস্টফুডের দোকান ও স্টলে হাঁসের মাংস বিক্রি হতে দেখা যায়। এই সুস্বাদু খাবারটি সহজলভ্য এবং অনেকের কাছে জনপ্রিয়, কিন্তু এর স্বাস্থ্যগত প্রভাব নিয়ে কিছুটা উদ্বেগও রয়েছে। বিশেষ করে রাস্তায় বিক্রি হওয়া হাঁসের মাংস আমাদের শরীরের জন্য কতোটা উপকারী কিংবা ক্ষতিকর তা জানা জরুরি। রাস্তায় বিক্রি হওয়া হাঁসের মাংসের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং উপকারিতা সম্পর্কে চলুন বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। 

স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি :

বিষাক্ততা ও দূষণ:

রাস্তায় উন্মুক্ত স্থানে খাবার পরিবেশন করা হয়, যেখানে খাবারের সহজেই জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া এবং দূষণের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদি হাঁসের মাংস সঠিকভাবে সংরক্ষণ বা রান্না না করা হয় তবে এতে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। উষ্ণ তাপমাত্রায় দীর্ঘ সময় খাবার রাখা হলে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি হতে পারে, যা খাদ্যবিষক্রিয়া এবং পেটের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

হাইজিনের অভাব:

রাস্তায় খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশন করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় স্যানিটেশন এবং পরিষ্কারের অভাব থাকতে পারে। খোলামেলা পরিবেশে রান্না এবং পরিবেশন করা হয়, যার ফলে খাবারে ময়লা, ধুলাবালি এবং অন্যান্য দূষণ থাকতে পারে। এসব খাবার খাওয়ার ফলে নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

প্রক্রিয়া ও সংরক্ষণ :

রাস্তায় হাঁসের মাংসের প্রক্রিয়া এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থার অভাব থাকলে এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সঠিকভাবে রান্না না করা মাংসে থাকা প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়া এবং টক্সিন আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।

খাদ্যগুণ ও পুষ্টি :

প্রোটিনের উৎস:

হাঁসের মাংস প্রোটিন, আয়রন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ, যা শরীরের মাংসপেশি গঠন এবং শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। তবে যদি মাংস সঠিকভাবে রান্না না হয়, তবে এতে থাকা পরজীবী বা ব্যাকটেরিয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

হজমের সমস্যা:

যদিও হাঁসের মাংসে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে, অতিরিক্ত তেল ও মশলাযুক্ত রান্না পদ্ধতি পেটের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। হাঁসের মাংস যদি বেশি তেলে ভাজা হয়, তবে তা হজমের জন্য কঠিন হতে পারে এবং বদহজম বা গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

স্বাস্থ্যকর বিকল্প :

বিশ্বস্ত উৎস থেকে কেনা :

রাস্তায় হাঁসের মাংস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে হবে। যেসব দোকান বা বিক্রেতা পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে, সেখানে খাবার খাওয়া উত্তম। এটি আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখবে।

ভালভাবে রান্না করা:

যতই সুস্বাদু হোক না কেন, হাঁসের মাংস সঠিক তাপমাত্রায় এবং সঠিক পদ্ধতিতে রান্না করা জরুরি। যদি মাংস ঠিকভাবে রান্না না করা হয় তবে এতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

স্বাস্থ্যকর বিকল্প:

রাস্তায় হাঁসের মাংসের বিকল্প হিসেবে গ্রিলড বা বেকড মাংস খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে তেলের পরিমাণ কম থাকে এবং পুষ্টিগুণও বজায় থাকে। এছাড়া শাকসবজি, ফলমূল বা হালকা স্ন্যাকস খাওয়ার মাধ্যমে শরীর সুস্থ রাখা সম্ভব।

রাস্তায় হাঁসের মাংস খাওয়া অনেকের কাছে সুস্বাদু হলেও এর স্বাস্থ্যঝুঁকি উপেক্ষা করা উচিত নয়। অতিরিক্ত তেল, সংক্রমণ এবং হাইজিনের অভাব এসব খাবারের মধ্যে পেটের সমস্যা এবং অন্যান্য রোগ সৃষ্টি করতে পারে। তাই যদি হাঁসের মাংস খেতে চান, তবে এটি সঠিকভাবে রান্না করা এবং পরিচ্ছন্ন স্থান থেকে কেনা জরুরি। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পরিমাণ এবং সঠিক পরিবেশ বজায় রাখা আবশ্যক।

সূত্র:

• খাদ্য নিরাপত্তা গবেষণা

• বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)

• জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা (FSSAI)

এসকে// 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #হাঁস #স্বাস্থ্যগত প্রভাব