ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে পলাতক আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী, বান্ধবী ও শ্যালককে আবারও রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছিদ্দিক আজাদের আদালত তিনজনের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গেল ১৫ ডিসেম্বর আসামিদের প্রথম দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। সেই রিমান্ড শেষে রেন্টকার ব্যবসায়ী মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বলকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ফের রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন—ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা এবং শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু।
শনিবার রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পুনরায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আবেদনে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত উদ্দেশ্য নির্ধারণ, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার, অর্থ জোগানদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের খোঁজ বের করা এবং পলাতক আসামিদের ধরতে রিমান্ড প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়।
পাশাপাশি অপর আসামি উজ্জ্বলকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তিন আসামির চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং উজ্জ্বলকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন—ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির ও মা মোসা. হাসি বেগম, স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু, রেন্টকার ব্যবসায়ী উজ্জ্বল, সহযোগী মো. কবির এবং ভারতে পালাতে সহায়তাকারী হিসেবে অভিযুক্ত সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম।
উল্লেখ্য, গেল ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে এই হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, গেল ১১ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। এর আগ থেকেই শরীফ ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগের পলাতক কেন্দ্রীয় নেতাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আসন্ন নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা ও নাশকতায় জড়িত ছিলেন।
ঘটনার দিন ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজ শেষে প্রচারণা শেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাওয়ার পথে দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটে মতিঝিলের বক্স কালভার্ট এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৫ ডিসেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য হাদিকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
এমএ//