আজ শনিবার (২২ অক্টোবর) ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস’ পালিত হচ্ছে ‘আইন মেনে সড়কে চলি, নিরাপদে ঘরে ফিরি’ এই প্রতিপাদ্যে। এ উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান নানান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসটি পালনে জনসাধারণকে সচেতন করার বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। নিরাপদ সড়কের বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে এসব কর্মসূচি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) বনানীতে বিআরটিএর চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ২২ অক্টোবরকে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। ২০১৭ সাল থেকে নানান আয়োজনে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
বিআরটিএ’র বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে নিরাপদ সড়ক দিবসে পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ, শোভাযাত্রা, আলোচনাসভা, সাজসজ্জা, গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও সড়কে নিরাপত্তাবিষয়ক পোস্টার, ব্যানার, স্টিকার প্রদর্শনসহ লিফলেট বিতরণ, রোড শো, বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে আলোচনার আয়োজন।
এ ছাড়া নিরাপদ দিবসের প্রতিপাদ্য দিয়ে মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি পালন ছাড়াও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে র্যালি ও আলোচনাসভার আয়োজন করা হবে।
এদিকে, জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর থেকে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন পর্যন্ত র্যালি ও পরবর্তী সময়ে মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে নেতৃত্ব দিবেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে সড়ক নিরাপত্তা কার্যক্রম টেকসই করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করার তাগিদ দিয়েছেন। উন্নত যোগাযোগ অবকাঠামো এবং যুগোপযোগী পরিবহন সেবা টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘একটি দক্ষ পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিতকল্পে সরকার মহাসড়ক নেটওয়ার্ক মেরামত, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ এবং সমন্বিত আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ অভ্যন্তরীণ ক্রমবর্ধমান সড়ক নেটওয়ার্ক নির্মাণের পাশাপাশি আন্তদেশীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণে উপ-আঞ্চলিক মহাসড়ক যোগাযোগ স্থাপনেরও কর্মপ্রয়াস চলমান আছে।’ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু এ লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ব্যাপকভাবে জনসচেতনতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে সবাইকে এগিয়ে আসার এবং ট্রাফিক আইন মেনে চলার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান। তিনি বলেন, সরকার সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়নের পাশাপাশি নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা জোরদার করার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। সড়ককে নিরাপদ করতে ডিভাইডার স্থাপন, বাঁক সরলীকরণ, সড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ, মহাসড়কে চালকদের জন্য বিশ্রামাগার নির্মাণ ও গতি নিয়ন্ত্রক বসানোসহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা আনয়ন, দক্ষ চালক তৈরি এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্স গঠন করেছি। আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর এবং টেকসই ও নিরাপদ মহাসড়ক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করাই সরকারের লক্ষ্য।
সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২২ অক্টোবরকে ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস’ ঘোষণা করে সরকার। এ বছর ৬ষ্ঠ বারের মতো দিবস পালিত হচ্ছে। ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে দুর্বার আন্দোলন হয় দেশে। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যমান আইন সংশোধন করে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ করা হয়।