মিতু হত্যা মামলায় মিথ্যা ও অসত্য তথ্য সরবরাহ করা এবং তা প্রচারের অভিযোগে পৃথক দুটি আইনে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের করা মামলায় পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকাল ৯টায় কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে বাবুল আক্তারকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এসময় তাকে রাখা হয় সিএমএম আদালতের হাজতখানায়।
চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানার ইনর্চাজ পুলিশের উপ-পরিদর্শক নাহিদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বাবুল আক্তারের উপস্থিতিতেই ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আদালতের ধানমন্ডি থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক(এসআই) শরীফ জানান, বুধবার (৯ নভেম্বর) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) রবিউল ইসলাম বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনসহ সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।
এর আগে গেলো ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বাদী হয়ে বাবুল আক্তার, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইনসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলাগুলো করেন। মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বাবুল আক্তারের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া এবং ভাই হাবিবুর রহমান লাবু।
মামলার এজাহারে পিবিআই প্রধান অভিযোগ করে বলেন, তার নেতৃত্বাধীন তদন্ত সংস্থা পিবিআই দেশের চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলা তদন্তাধীন থাকার সময়ে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার প্রধান আসামি হিসেবে তদন্তে প্রকাশ পায়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেল হাজতে থাকা বাবুল আক্তার ও বিদেশে অবস্থানরত সাংবাদিক ইলিয়াসসহ বাকি আসামিরা মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত ও পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেন।
এরই ধারাবাহিকতায় বাবুল আক্তার ও অন্যান্য আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনায় কথিত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন গেলো ৩ সেপ্টেম্বর তার ফেসবুক আইডির মাধ্যমে ‘স্ত্রী খুন, স্বামী জেলে, খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব’ শিরোনামে একটি ডকুমেন্টারি ভিডিও ক্লিপ আপলোড করেন। যা সম্পর্কে ৪ সেপ্টেম্বরে তিনি অবগত হন।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, ভিডিওতে বিভিন্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যের মাধ্যমে মিতু হত্যা মামলার তদন্তকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধসহ বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, ইলিয়াস হোসাইন ভিডিওতে প্রচারিত বক্তব্যে দেশের ভাবমূর্তি এবং দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উসকানি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভিডিওতে পুলিশ এবং পুলিশের বিশেষায়িত তদন্ত সংস্থা পিবিআই ও বিশেষ করে বনজ কুমারের মান-সম্মান ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হয়েছে। যার জন্য দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে এর নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করে।
পিবিআই প্রধান এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, ভিডিওতে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুপ্রতীম দেশ ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস করা হয়। রাষ্ট্রের হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও অস্থিরতা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিরও অপপ্রয়াস করেছে।
এছাড়া এজাহারে ওই ভিডিও ডকুমেন্টারি বিভিন্ন তথ্য ও বক্তব্যকে মিথ্যা দাবি করে বিভিন্ন প্রমাণ ও তথ্য উপস্থাপন করেন বনজ কুমার।