আর্কাইভ থেকে আন্তর্জাতিক

একসঙ্গে ৯ সন্তান জন্ম, নাম উঠেছে গিনেজ বুকে

একসঙ্গে ৯ সন্তান জন্ম, নাম উঠেছে গিনেজ বুকে
বিভিন্ন জায়গায় অনেক সময় আমরা দেখতে পারি একসঙ্গে পাঁচ, ছয়, সাত সন্তান প্রসব। আপাতদৃষ্টিতে এই খুশির খবরগুলোর শেষ পরিণতি ভালো হয় না। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একে একে এই বাচ্চাগুলোর মৃত্যু হয় কয়েকদিনের মধ্যে। তবে মালির এক দম্পতির ঘরে একসঙ্গে আসা ৯ সন্তানের বয়স দেখতে দেখতে এখন দাঁড়িয়েছে ১৯ মাসে। আর ১৯ মাস জীবিত থাকার পর তাদের নাম উঠে গেছে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। গিনেজ বলছে, এই প্রথম ননুপ্লেটস (একসঙ্গে একই গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ নয় সন্তান) বা নবমজের জন্ম হল, যেখানে মা এবং শিশুরা জীবিত আছে। গিনেজের রেকর্ড অনুযায়ী এর আগে কোনো ননুপ্লেটস কয়েক ঘণ্টার বেশি বাঁচেনি। তাই ননুপ্লেটসের জন্ম একটি অত্যন্ত বিরল ঘটনা। এই নবমজের বাবা ও মায়ের নাম আবদেলকাদের আরবি ও হালিমা সিসে। আবদেলকাদের ও হালিমা মালির মানুষ হলেও বিরল এই নবমজের জন্ম ও চিকিৎসার জন্য তাদের যেতে হয়েছিল মরক্কোতে। সন্তানের জন্মের ১৯ মাস পর গত সপ্তাহে অবশেষে তারা বাড়ি ফিরেছেন। ৯ সন্তানের মা হালিমা সিসে জানান, এদের একসঙ্গে ঘুম পাড়ানো সহজ কাজ না। বিছানায় নিয়ে জড়িয়ে ধরে রাখা লাগে। এভাবে ঘুমানোটা পছন্দ ওদের। এরআগে যুক্তরাষ্ট্রের নাদিয়া সুলেমান একসঙ্গে আট সন্তানের জন্ম দিয়ে (বাচ্চাদের বেঁচে থাকার ভিত্তিতে) রেকর্ড গড়েছিলেন। ২০০৯ সালের ওই ঘটনায় নাদিয়া ‘অক্টোমম’ উপাধি পেয়েছিলেন। ৯ সন্তানের বাবা আবদেলকাদের জানান, আমরা ৭টার কথা জেনেছিলাম, আল্লাহ আমাদের ৯টা বাচ্চা উপহার দিয়েছেন। প্রথমে মালির ডাক্তাররা ভেবেছিলেন যে হালিমার গর্ভে সাতটি সন্তান রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য এরপর তাকে মরক্কোর একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই হাসপাতালে নেয়ার পর দেখা যায়- হালিমার পেটে আরও দুটি, অর্থাৎ মোট ৯টি সন্তান। গর্ভাবস্থার ৩০ সপ্তাহের মাথায় অপরিপক্ক (প্রিম্যাচিউর) অবস্থায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পাঁচটি মেয়ে শিশু ও চারটি ছেলে শিশুর জন্ম দেন হালিমা। শিশুগুলোর ওজন ছিল ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কেজির মধ্যে। এই শিশুদের জীবন নিয়ে ঝুঁকি থাকার কারণে তাদের সার্বক্ষণিক চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। তারা এই ১৯ মাস বিশেষভাবে সজ্জিত একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন যেখানে নার্সরা তাদের সার্বক্ষণিক সহায়তা করতো। যে হাসপাতালে বিরল এই ঘটনা ঘটেছে সেই হাসপাতালে পরিচালক রশদি তালিব বলছেন, প্রসবপরবর্তী রক্তক্ষরণ ঠেকাতে কোনোভাবেই যেন দেরি না হয় সেটা মাথায় রেখে আমাদের মায়ের দিকে নজর দিতে হয়েছে আগে। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ যে আমাদের টেকনিক্যাল রিসোর্স ও যোগ্যতাসম্পন্ন স্টাফ ছিল। সর্বমোট ৩২ জন এর পেছনে কাজ করেছেন। হাসপাতালের এই কর্মীদের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ আবদেলকাদের ও হালিমা। এই ৯টি ছাড়াও তাদের চার মাস বয়সী আরও একটি মেয়ে রয়েছে, যার নাম সৌদা। আবদেলকাদের বলেন, সর্বশক্তিমানের পরে, আমার দেশ মালির কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ জানাই, যারা ফলোআপ এবং সমস্ত খরচের ব্যবস্থা করেছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন একসঙ্গে | ৯ | সন্তান | জন্ম | নাম | উঠেছে | গিনেজ | বুকে