বাংলাদেশ সফরে এসে বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেননি মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু। দেশের প্রধান বিরোধী দলের সঙ্গে কেন তিনি বৈঠক করেননি সে বিষয়ে জানতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞেস করুন। বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
আজ মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ পরামর্শ দেন।
সাংবাদিকরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, কেন ডোলান্ড লু ঢাকা সফরের সময় বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেননি? জবাবে তিনি বলেন, ওটা ওদের (যুক্তরাষ্ট্র) জিজ্ঞেস করুন। আমাকে জিজ্ঞেস করছেন কেন?
লু’র বাংলাদেশ সফরের কারণ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত করতে সহযোগিতা করার জন্য তিনি এসেছেন। আরেকটি কারণ হলো দুই দেশের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করা। আমরা বলেছি যে, আমাদের কিছু কিছু দুর্বলতা আছে। উনিও স্বীকার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রেরও কিছু দুর্বলতা আছে। আমরাও সঠিক নই। আমরা একই পর্যায়ে আছি।
তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। খুব গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। খুব পজিটিভ। আমাদের নিয়ে তারা খুব খুশি। আমরাও এটা নিয়ে খুশি। প্রেসিডেন্ট বাইডেন চাচ্ছেন, আগামী ৫০ বছর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের যেন উন্নতি হয়। আর আমরা একটা বড় অর্থনীতির দেশ হয়ে যাচ্ছি।
যুক্তরাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশও গণতন্ত্র ও মানবাধিকারে জোর দেয় জানিয়ে তিনি বলেন, আমেরিকার ভ্যালু ও প্রিন্সিপাল আমাদের সঙ্গে তো এক। তারা গণতন্ত্র চায়, আমরাও চাই। আমরা গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়েছি। তারা মানবাধিকার চায়, আমরাও চাই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যত্যয় হয়। এ ব্যাপারে আমরা বলেছি, আপনাদের যদি কোনো সমস্যা থাকে আমাদের বলবেন।
ডোলান্ড লু’র ঢাকা সফর বেশ ভালো হয়েছে বলে মনে করছেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, সফর খুব ভালো হয়েছে।
র্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। র্যাব তো কিছু উল্টা-পাল্টা কাজ করেছে, এটা ফ্যাক্ট। অস্বীকার করা যাবে না। র্যাব এখন খুব পরিপক্ক। তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা বেড়েছে।
শ্রম আইন নিয়ে বাংলাদেশের কিছুটা কমতি আছে স্বীকার করেন মোমেন। তিনি বলেন, আমাদের একটা সমস্যা আছে লেবার ইস্যু নিয়ে। প্রধানমন্ত্রীও অনেক কাজ করেছেন। এটা নিয়ে কাজ করতে হবে। এটাতে কিছু আইনে গ্যাপ আছে।
গেলো শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকায় আসেন লু। সফরের শুরুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে তার ইস্কাটনের বাসায় নৈশভোজে অংশ নেয়ার পাশাপাশি বৈঠক করেন তিনি।
সফরের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন লু। পরে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। সেখান থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি।
এরপর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে পররাষ্ট্র সচিব আয়োজিত মধ্যাহ্ন ভোজে যোগ দেন লু। তিনি সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সফর শেষে রোববার (১৫ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা ছাড়েন ডোনাল্ড লু।