হিরো আলম কোনো দলের সঙ্গে জড়িত না। না বিএনপি, না আওয়ামী লীগ, না অন্য কোনো দল। বলেছেন বগুড়ার দুই আসনের উপনির্বাচনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে ফেসবুক লাইভে তিনি এসব কথা বলেন। তাকে নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের বিভিন্ন মন্তব্যের জেরে তিনি ফেসবুক লাইভে আসেন।
হিরো আলম বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের স্যার আজকে হিরো আলমকে নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন। হিরো আলমকে নাকি বিএনপি ভোটে দাঁড়িয়ে দিয়েছে। আমার কথা আমাকে কেন বিএনপি দাঁড়িয়ে দেবে। ভোটের মাঠে আমার পাশে কি বিএনপির কাউকে দেখা গিয়েছিল।
বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম স্যার বলেছেন, বর্তমান সরকার আজকে হিরো আলমের কাছে অসহায়। আমি বলতে চাই- আমি হিরো আলম যে অসহায় হয়েছি এই প্রশ্নের জবাব কে দেবে? আমার যে ভোটের ফলাফল কেড়ে নেয়া হলো তার প্রশ্নের জবাব কে দেবে?
হিরো আলম বলেন, ওবায়দুল কাদের স্যার আরও একটি কথা বলেছেন, হিরো আলম এখন জিরো হয়ে গেছে। এটা ভুল বলেছেন। হিরো আলমকে কেউ কোনো দিন জিরো বানাতে পারেনি, পারবেও না।
আলোচিত এ ইউটিউবার বলেন, হিরো আলম কারো কাঁধের ওপর ভর দিয়ে এখানে আসেনি। হিরো আলমকে হারানো হয়েছে এটা একটা প্ল্যান, চক্র করে হারানো হয়েছে। হিরো আলমকে প্ল্যান করে হারানো হয়েছে। অনেকে বলছেন, পার্লামেন্টকে ছোট করা হবে, হিরো আলম নির্বাচন করলে। তাহলে পার্লামেন্টে যেতে হলে কিছু আইন করতে হবে। যার যোগ্যতা নেই সে যেতে পারবে না। যার লেখাপড়া নেই সে সংসদে যেতে পারবে না।
হিরো আলম বলেন, আর একটা বিষয়ে আইন করছেন। যারা ভোট করবে স্বতন্ত্রভাবে তাদের ১ শতাংশ ভোটার তালিকা লাগবে। যদি তাই হয়, তাহলে দলীয়ভাবে যারা করবে তাদের ১ শতাংশ লাগে না কেন? আইন সবার জন্য সমান। তাহলে আইন চেঞ্জ করতে হবে। যারা দলীয়ভাবে বা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবেন, তাদের সবার ১ শতাংশ ভোটার তালিকা দিতে হবে। না হলে ১ শতাংশ তুলে দিতে হবে।
লাইভে হিরো আলম সবার উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, আমি হিরো আলম চ্যালেঞ্জ করছি সুষ্ঠু নির্বাচন দেন, প্রতি সেন্টারে সিসি ক্যামেরা দেন, বুথে সিসি ক্যামেরা দেন, ইভিএম দেবেন না। কারণ ইভিএম হলো চোর। বাইরের দেশে ইভিএম ডাস্টবিনে ফেলে দিছে। সেটা আমাদের দেশ কুড়িয়ে নিয়ে এসে ভোট করছে। এখানেও কারচুপি হয়। ইভিএমে টিপ মারলে একটায়, যায় আরেকটায়।
তিনি বলেন, আমি হিরো আলম কোনো দলের সঙ্গে জড়িত না। না বিএনপি, না আওয়ামী লীগ, না অন্য কোনো দল। তাই আপনারা আমাকে নিয়ে কোনো মাখামাখি করবেন না। আপনারা একজন আরেকজনকে দোষ দেবেন না আমাকে নিয়ে।
প্রসঙ্গত, বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী জাসদ নেতা রেজাউল করিম তানসেন বিজয়ী হয়েছেন। মশাল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ২০ হাজার ৪০৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিরো আলম একতারা প্রতীকে ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট পেয়েছেন। তিনি মাত্র ৮৩৪ ভোটে হেরে গেছেন।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত এই আসনে ভোটগ্রহণ করা হয়। নির্বাচনে মোট ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই আসনের ৩ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯ জন ভোটারের মধ্যে ৭৮ হাজার ৫৭০ জন ভোট দেন। যা শতকরায় ২৩ দশমিক ৯২ শতাংশ।
অন্যদিকে বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু ৪৯ হাজার ৩৩৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হয়েছেন। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম একতারা প্রতীকে মাত্র ৫ হাজার ২৭৪ ভোট পেয়েছেন।